• শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪২৮
প্রবৃদ্ধি কমেছে রাজস্ব আদায়ে

ছবি : সংগৃহীত

রাজস্ব

প্রবৃদ্ধি কমেছে রাজস্ব আদায়ে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০১ আগস্ট ২০১৯

বিগত ২০১৮-১৯ অর্থবছর ২ লাখ ২৩ হাজার ৮৯২ কোটি ৪২ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ওই অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ১০ দশমিক ৭ শতাংশ, যা তার আগের ১১ অর্থবছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

গতকাল বুধবার এসব তথ্য জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান। বিভিন্ন সেক্টরের ভ্যাট অব্যাহতি, পণ্য আমদানিতে শুল্ক ও আয়কর অব্যাহতি দেওয়াসহ বড় বড় প্রকল্প চালু করায় গত বছর রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি কমেছে বলে তিনি জানান।

এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে ২০০৯-১০ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১৮ দশমিক ১ শতাংশ, ২০১০-১১ অর্থবছরে হয়েছিল ২৮ শতাংশ, ২০১১-১২ অর্থবছরে ১৯ দশমিক ৭ শতাংশ, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ১০ দশমিক ৭ শতাংশ, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১২ দশমিক ৩ শতাংশ, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১৩ দশমিক ২ শতাংশ, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১১ দশমিক ৭ শতাংশ, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১৭ দশমিক ৯ শতাংশ।

মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আয়করে ৭২ হাজার ৮৯৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে, যা মোট রাজস্বের ৩২ দশমিক ৬ শতাংশ। এর মধ্যে ভ্যাট থেকে ৮৭ হাজার ৬১০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে, যা মোট রাজস্বের ৩৯ দশমিক ১ শতাংশ। কাস্টমস থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬৩ হাজার ৩৮২ কোটি ১৬ লাখ টাকা। যা মোট রাজস্বের ২৮ দশমিক ৩ শতাংশ। টাকার পরিমাণে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেলেও প্রবৃদ্ধির হারে তা কম।

প্রবৃদ্ধি কমার কারণ হিসেবে এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, গত অর্থবছরের ভ্যাটের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু খাতে যেমন গ্যাস, ইন্টারনেট, রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস শিল্প, সোলার মডিউল, ট্রাভেল এজেন্ট, বেবি লোশন, হাওয়াই চপ্পল ও কম্পিউটার যন্ত্রাংশে প্রায় ১৫ হাজার ১৯২ কোটি টাকার ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কাস্টমসের ক্ষেত্রে মূলধনী যন্ত্রপাতি, ব্যাগেজ রুলস, মোবাইল ম্যানুফ্যাকচারিং, পোল্ট্রি রিলিফ গুডস, শিপ, বেজা ও কূটনৈতিক মিশনে প্রায় ১ হাজার ৫০২ কোটি টাকার আমদানি শুল্ক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, বাজেটে নতুন ভ্যাট আইন পাস হয়েছে। জুলাই থেকে কার্যকর হয়েছে। নতুন আইন বাস্তবায়ন হওয়ার ফলে ভ্যাট আদায় বাড়বে। এ জন্য ইএফডি ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। এরই মধ্যে ইএফডি কিনতে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আগামী ২ বছরের মধ্যে প্রায় ১০ লাখ ইএফডি বসানো হবে। এতে রাজস্ব আহরণ বাড়বে। একই সঙ্গে বন্ড সুবিধার অপব্যবহার রোধে এনবিআর তৎপর হয়েছে। ফাঁকিবাজ বন্ড প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে। অন্যদিকে ভ্যাট ও শুল্ক ফাঁকি রোধে বিশেষ অভিযান অব্যাহত আছে।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয়ের প্রায় ৮৫ শতাংশ এনবিআরের মাধ্যমে আহরিত হয়। ২০১৯-২০ অর্থবছরে সরকারের মোট রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৪২ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩ লাখ ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা এনবিআরকে আহরণ করতে হবে, যা গত অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা বেশি। এনবিআর আশা করছে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে রাজস্ব আহরণে এনবিআর এগিয়ে যাবে।

জানা গেছে, বিদায়ী অর্থবছরে এনবিআরের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ৮০ হাজার ৬৩ কোটি টাকা। আর এনবিআর এই সময়ে রাজস্ব আহরণ করেছে ২ লাখ ২৩ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সংশোধিত রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫৬ হাজার ১৮১ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে। 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads