নানা নাটকীয়তার পর অবশেষে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীত্ব হারালেন ইমরান খান। শনিবার মধ্যরাতে দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে তার বিরুদ্ধে আনা বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাবের ভোটাভোটিতে ক্ষমতাচ্যুত হলেন তিনি।
কয়েক দফা মুলতবির পর দেশটির স্থানীয় সময় শনিবার রাত ১১টা ৫০ মিনিটে পাকিস্তানের সংসদ অধিবেশন অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হয়। ভোটাভুটিতে ইমরানের বিরুদ্ধে ভোট পড়ে ১৭৪ টি। তবে ৩৪২ আসনের জাতীয় পরিষদে প্রস্তাবটি পাসের জন্য দরকার ছিল ১৭২ ভোট। ভোট শেষে প্যানেল স্পিকার পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ) নেতা আয়াজ সাদিক এ ফলাফল ঘোষণা করেন।
পাকিস্তান সংবাদমাধ্যম ডন এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য দেয়। আরও জানা যায়, ভোটগ্রহণ শুরুর কয়েক মিনিট আগে পাকিস্তানের স্পিকার আসাদ কায়সার ও ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি নিজেদের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। পদত্যাগের আগে আসাদ কায়সার জানান, তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতাচ্যুত করার ‘বিদেশি ষড়যন্ত্রে’ অংশ নিতে পারবেন না।
এর আগে সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ মেনে স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টাতেই বসে পাকিস্তানের পার্লামেন্টের অধিবেশন। কিছুক্ষণ না যেতেই দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তা মুলতবি করা হয়। পুনরায় অধিবেশন বসতে না বসতে আবারও মুলতবি। এভাবে তিন দফা মুলতবি শেষে ইফতারের পর অধিবেশন শুরু হয়। তবে এবারও ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটির ঘোষণা এলো না। এরপর ভোটাভুটি শুরুর ঠিক আগ মুহূর্তে নিজেদের পদ থেকে সরে দাড়ালেন পাকিস্তানের স্পিকার আসাদ কায়সার ও ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি। এরপর প্যানেল স্পিকার আয়াজ সাদিকের সভাপতিত্বে অনাস্থা ভোট শুরু হয়।
আর্থিক দুরবস্থা ও ভুল পররাষ্ট্রনীতির অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে বিরোধী দলগুলো। এ অনাস্থা প্রস্তাবকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে ৩ এপ্রিল খারিজ করে দেন জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি। ওই দিনই প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। এতে চরম রাজনৈতিক সংকটে পড়ে পাকিস্তান।
পাকিস্তানের ২২ তম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ইমরান খান। তার ক্ষমতাচ্যুতির মধ্য দিয়ে দেশের নির্বাচিত একজন প্রধানমন্ত্রীও তাদের মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেনি।