চলতি মাসের ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২দিন মা ইলিশ নিধনবিরোধী অভিযান চলমান রয়েছে। কিন্তু পদ্মাপাড়ে নৌকা, জাল নিয়ে জেলেদের তৎপরতা আর উপজেলার বরফকলগুলো চালু রাখা, মাছ সংরক্ষণে বিক্রির জন্য দোকানগুলোতে ককশিট রাখা দেখে এবারের অভিযানের সফলতা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
অথচ এ অভিযান সফল করার লক্ষ্যে গত ২৭ সেপ্টেম্বর লৌহজং উপজেলার আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে - হাটবাজার, স্কুলকলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে লিফলেট বিতরণ, মসজিদের ইমামদের মাধ্যমে জনসাধারণকে সচেতন করা, ইলিশ মাছ ধরার জন্য স্পিডবোট ভাড়া না দেওয়া, বিশেষ করে জনপ্রতিনিধিরা এলাকার জেলেদের নিয়ে উঠান বৈঠকের ব্যবস্থা করা। কিন্তু এরপরে গত ১ অক্টোবর উপজেলা পরিষদ মিলনাতয়নে জেলেদের নিয়ে সমাবেশের আয়োজন করে উপজেলা মৎস্য বিভাগ। এখানে সাধারণ জেলেসহ তাদের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকলেও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান কিংবা নির্বাহী কর্মকর্তার মধ্যে কেউ উপস্থিত ছিলেন না। এ কারণে জেলেরা তাদের দাবি-দাওয়া জানাতে পারেননি। এছাড়া গত রোববার বিকেলে লৌহজং-তেউটিয়া ইউনিয়নের ঝাউটিয়া চরের বাগানবাড়িতে জেলেদের নিয়ে সর্বশেষ সমাবেশেও উপজেলার শীর্ষ কর্মকর্তাদের কেউ উপস্থিত ছিলেন না। এ নিয়ে আরেক প্রস্থ ক্ষুব্ধ হয় সাধারণ জেলেরা।
উল্লেখ্য, গতবছর লৌহজংয়ে পদ্মা নদীতে মা ইলিশ নিধনবিরোধী অভিযান ব্যর্থ হয়েছিল নানা কারণে। অনেক অসাধু জেলে মা ইলিশ ধরতে গিয়ে তখন পুলিশের হাতে আটক হয়েছিল, সেইসাথে জরিমানাও গুনেছিল তারা। এমনকি অভিযান চালাতে সে সময়ের সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসানসহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা জেলেদের আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন। কিন্তু এ বছর কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করেই পদ্মা তীরবর্তী জেলেরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছেন। গতকয়েক দিন ধরেই দেখা যাচ্ছে লৌহজং-তেউটিয়া ইউনিয়নের ঝাউটিয়া গ্রামের চরে নৌকা ও জাল নিয়ে পদ্মায় মা ইলিশ ধরার জন্য জেলেদের প্রস্তুতি নেওয়ার দৃশ্য দেখা গেছে।
লৌহজং উপজেলার ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পদ শূণ্য রয়েছে গত রোববার বদলি হবার নির্দেশ এসেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনওর চলছে বদলি হবার প্রস্তুতি। গতবছর সারাদেশে মা ইলিশ অভিযান সফল হলেও, সফল হয় নি লৌহজংয়ে। জেলেদের জেল, জরিমানা করলেও থেমে থাকেনি গতবছর মা ইলিশ ধরা। দেখা দিয়েছিলো পদ্মার চরে অনেক গাইবী হাট যেখানে রাতের আঁধারে বিক্রি হয়েছে মা ইলিশ। তাই জনসাধারনের কাছে প্রশ্ন জেগেই যাচ্ছে এবছর কি সফল হবে মা ইলিশ রক্ষা অভিযান।