সোনাগাজীতে ধর্ষকের ছেলের বিরুদ্ধে ধর্ষিত গৃহবধু কে অপহরণ করে গর্ভপাত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ওই গৃহবধু অপহরণের তিনমাস পর শনিবার (১৪ মার্চ) রাতে ফেনী শহরের পূর্ব দেবীপুর এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। গৃহবধুকে ধর্ষণে অভিযুক্ত চাচা শ্বশুরের বিরুদ্ধে মামলা করায় গত ৯ডিসেম্বর ফেনীর আদালতপাড়া থেকে অপহরণের শিকার হন তিনি।
সোনাগাজী মডেল থানার উপ-পরির্দশক (এসআই) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ফেনী পৌরসভার পূর্ব দেবীপুর এলাকার একটি বাসা থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করা হয়েছে।
উদ্ধারের পর ওই নারী পুলিশকে জানান, গত বছরের ৯ডিসেম্বর কারাগার থেকে আমি বের হলে ধর্ষক চাচা শ্বশুরের ছেলে রিয়াদ হোসেন ও তার বন্ধু মোরশেদ আলম স্বপন আমাকে গাড়িতে করে একটি বাসায় নিয়ে আটকে রাখে। অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দুই-তিনদিন পর পর তারা দুই জনসহ আরও একজন মিলে আমাকে জোরপূর্বক ওষুধ খাইয়ে ও ইনজেকশন দিয়ে অচেতন করে আমার গর্ভের সন্তানকে মেরে ফেলে। পরে আমার মৃত সন্তান প্রসব হয়। তখন আমি সাত মাসের অন্তসত্ত্বা ছিলাম। এরপর তারা আমাকে টাকা পয়সা দিয়ে সহযোগিতা করাসহ বিভিন্ন ধরণের প্রলোভন দেখিয়ে টাঙ্গাইলে নিয়ে একটি ভাড়া বাসায় রেখে আসে। সেখানে রিয়াদের একবন্ধু আমাকে বাজার করে দিত। আমি বাসা থেকে বের হতে পারতাম না। প্রায় দুইমাস পর আমি কৌশলে ওই বাসা থেকে বের হয়ে মুঠোফোনে আমার ছোট ভাইকে বিষয়টি বলি। পরে সে টাঙ্গাইলে গিয়ে গোপনে আমাকে ফেনী নিয়ে আসে।
এর আগে গত বছরের ২২নভেম্বর সোনাগাজী সদর ইউনিয়নের ছাড়াইতকান্দি গ্রামের বক্স আলী সুফি বাড়ির সফি উল্যাহর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন পাঁচ মাসের অন্ত:সত্ত্বা গৃহবধূ রুনা আক্তার।
মামলার অভিযোগে জানা যায়, গত বছরের ১৮জুন তার শ্বাশুড়ি লাকি আক্তার নিকটাত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান। সে তার ৮বছরের শিশুপুত্রকে নিয়ে শয়ন কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন। এই সুযোগে রাতে তার শয়ন কক্ষে ঢুকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর পূর্বক তাকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে। তার স্বামী দুই বছর আগে ওমান চলে যান।
জানা গেছে, মামলা দায়েরের পর অভিযুক্ত শফি উল্যাহ ফেনীর আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করেন। এসময় মামলার বাদিও একই আদালতে হাজির হন। বাদি আদালতে লিখিত আবেদনে এ মামলার আসামিকে জামিনের আপত্তি নেই বলে জানান।পরে ওই মিথ্যা মামলা করার অভিযোগে আদালতের আদেশে বেঞ্চ সহকারী রবিউল ইসলাম বাদি হয়ে ওই নারীর বিরুদ্ধে ফেনীর আদালতে আরেকটি মামলা করেন। পরে মিথ্যা ধর্ষণের মামলা করায় বাদিকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন আদালত।
তবে উদ্ধারের পর গত সোমবার সোনাগাজী মডেল থানায় ধর্ষণ মামলার বাদি গৃহবধু পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে বলেন, আমি লেখাপড়া জানি না। একজন আইনজীবি, রিয়াদ ও মোরশেদ মিলে আমাকে মামলায় সহযোগিতা করার কথা বলে একটি কাগজে আমার নাম লিখে নেয়। তারা আমাকে অনেক ধরণের ভয়ভীতি দেখিয়ে আদালতে হাজির করেন। আদালত আমাকে কারাগারে পাঠালে তারা আবার আমার জামিনের ব্যাবস্থা করেন।
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঈন উদ্দিন আহমেদ বলেন, গর্ভের সন্তান নষ্ট ও ইচ্ছার বিরুদ্ধে গর্ভপাত করানোর অভিযোগে রিয়াদ ও তার বন্ধু মোরশেদসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।