নেত্রকোনায় করোনা দুর্যোগে শ্রমিক সংকট দেখা দেয়ায় জমির পাকা ধান কেটে গোলায় তুলে আনার অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
জেলার কৃষি কর্তৃপক্ষ জানান, নেত্রকোনায় এবার এক লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে এখানকার হাওর এলাকায় বোরো আবাদ হয় ৪০ হাজার ৮৬৫ হেক্টর জমিতে। জেলায় এবার ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১১ লাখ ১৯ হাজার ৫৬১ মেট্রিক টন। কিন্তু বিশ্বব্যাপী করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে ধান কাটা-মাড়াইয়ের শ্রমিক সংকট দিয়েছে। এখানে আবাদ করা বোরো ধানের ফলন ঘরে তোলা নিয়ে চরম হতাশায় রয়েছে কৃষক।
মোহনগঞ্জ উপজেলার তেতুলিয়া গ্রামের কৃষক মির্জা রফিকুল হাসান বলেন, এখন বোরো ধান কাটার সময়। ধান কাটা শ্রমিকদের আগাম টাকা দিয়ে রেখেছিলাম। কিন্তু করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ভয়ে শ্রমিকরা এখন আসবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। পাকা ধান নিয়ে এখন বিপদে আছি।
জেলার খালিয়াজুরী উপজেলা সদরের কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, হাওড়াঞ্চলের সমস্ত ধান কাটা-মাড়াই শেষ করতে হয় মাত্র একমাস সময়ের মধ্যে। অন্যতায় বর্ষার পানিতে তলিয়ে যায় ফসল। ধান কাটার ওই সময়টিতে স্থানীয় শ্রমিক দিয়ে চাহিদা পূরণ হয় না। এ জন্য প্রতিটি মৌসুমেই ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল ও উত্তরাঞ্চলসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ধান কাটা শ্রমিকদের ওপর নির্ভর করতে হয়।
তিনি আরো বলেন, ঋণের টাকায় ধান আবাদ করেছি। এখন পাকা এ ধান কাটতে না পারলে সর্বনাশ হয়ে যাবে।
নেত্রকোনা জেলা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক জানান, ধান সহজে কাটা মাড়াইয়ের জন্য জেলায় কৃষকদের কাছে ৮২টি পুরনো হারভেস্টার মেশিন রয়েছে। নতুন করে কিছু দিনের মধ্যেই আরও ৪২টি হারভেস্টার মেশিন বিতরণ করা হবে।