নেত্রকোণার কলমাকান্দায় পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে তিন দফার বন্যায় প্রায় ৩ হাজার ৬০০ পুকুরের মধো ২ হাজার ৫০০ পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে পুঁজি হারিয়ে মৎস্য চাষীর অনেকেই দিশেহারা । এবারের বন্যার পানিতে ভেসে গেল কলমাকান্দার মাছ চাষীদের স্বপ্ন।
উপজেলার মৎস্য অফিস সুত্রে জানা গেছে, ইতিপূর্বে প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে প্রায় ২ হাজার ৩৪৯ টি পুকুরের মাছ সম্পূর্ণ ভেসে গেছে। এখন আবার নতুন করে তৃতীয় ফের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে পানি বৃদ্ধিতে আরো প্রায় ১৬০ জন মৎস্য চাষীরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। উপজেলায় এলাকার বেকার যুবকরা মৎস্য চাষের উপর নির্ভর করে নিজ বা লীজ নেয়া জমিতে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার স্বপ্ন দেখে পুকুরে মৎস্য চাষ করে থাকেন। এ বছরের বন্যায় সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছে উপজেলার বেশি সংখ্যক পুকুর মৎস্য চাষীরা।
উপজেলায় প্রায় সাতশ মেট্রিকটন মাছের ক্ষতি হয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৭ কোটি টাকা। এ উপজেলায় মুক্ত ও বদ্ধ জলাশয়ের পরিমাণ ৪৩০০ হেক্টর। তাতে মাছ উৎপাদন হয় আনুমানিক ৮ হাজার মেট্রিকটন। উপজেলায় চাহিদা প্রায় ৬২০০ হাজার মেট্রিকটন। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ২ হাজার মেট্রিকটন উদ্বৃত্ত মাছ রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হতেন।
বড়খাপন এলাকার মৎস্যচাষী এখলাছ উদ্দিন বলেন, আমি তিনটি পুকুরে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মাছ চাষ করি। বন্যার আশঙ্কায় পুকুরের পাড়ে জাল দিয়ে ঘের দিয়েছিলাম। কিন্তু অতি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের তোড়ে জালের বেড়াতো টিকেনি, পাড়ও ধসে গেছে। চোখের সামনে দিয়ে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। শুধু তিনিই নন উপজেলার বেশি সংখ্যক পুকুর মৎস্য চাষীদের স্বপ্ন বন্যার পানিতে ভেসে গেল।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অনিক রহমান প্রতিবেদককে জানান, উপজেলায় প্রায় ৭ কোটি টাকার মৎস্য সম্পদ এ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যচাষীদের তালিকা করে জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঠিয়েছি।