দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর পার্শ্ববর্তী বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির চীনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকদের কোভিড-১৯ নমুনা পরীক্ষা কাজে বাঁধাদানের অভিযোগে পাঁচজন শ্রমিক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছেন পুলিশ।
আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় পার্বতীপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মেখালেছুর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি আবাসিক গেটের সামনে থেকে পাঁচজন খনি শ্রমিক নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত খনি শ্রমিক নেতারা হলেন- বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি, সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান, দপ্তর সম্পাদক এরশাদ আলী, জাতীয় শ্রমিক লীগ বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি শাখার সহ-সভাপতি মাহাবুবুর রহমান ও সাংগঠনিক সম্পাদক বেলাল হোসেন।
খনি সূত্রে জানা যায়, খনির চীনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এসএমসি-এক্সএমসি কনসোর্টিয়াম খনিতে কর্মরত ১ হাজার ১৪৭ জন শ্রমিকের মধ্যে পর্যায়ক্রমে ৪০০ শ্রমিককে বাছাই করে কাজে যোগদানের উদ্যোগ নেয়। এজন্য গত বৃহস্পতিবার হলদিবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০৫ জন শ্রমিকের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। ওই ১০৫ শ্রমিকে কাজে যোগদানের জন্য গতকাল শনিবার (২৫ জুলাই) খনির ভেতরে নিয়ে ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানোর উদ্যোগ নেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শ্রমিক নেতাদের বাঁধার মুখে কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ ভেস্তে যায়। ফলে কোন শ্রমিককেই হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠাতে পারেননি কর্তৃপক্ষ। একইভাবে শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া নিয়ে গত ১৩ জুলাই ভবানীপুর শেরপুর উচ্চ বিদ্যালয় চত্বরে খনি কর্তৃপক্ষের সাথে শ্রমিকদের সমঝোতা বৈঠক হয়। কিন্তু শ্রমিকরা তাদের দাবী দাওয়ার বিষয়ে অনড় থাকায় ওই বৈঠকও ভেস্তে যায়। এরপর থেকে শ্রমিকরা খনির আবাসিক গেটের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি শাখা জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম রতন বলেন, কর্তৃপক্ষ ষড়যন্ত্রমূলকভাবে হয়রানি করতেই পাঁচজন শ্রমিকনেতাকে গ্রেপ্তার করিয়েছেন। আজ রোববার সকাল থেকে গ্রেপ্তার শ্রমিকনেতাদের মুক্তির দাবিতে খনি গেটে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হবে।
পার্বতীপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, সরকারি কাজে বাঁধাদান, রাস্তায় অবরোধ সৃষ্টিসহ ভাংচুরের অভিযোগে পাঁচজন শ্রমিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে থানায় ইতোপূর্বে দায়েরকৃত পাঁচটি মামলা রয়েছে।
বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানী লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান খানের সাথে তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোনকল গ্রহণ না করায় এ বিষয়ে তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।