• শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪২৮
সেতুর অভাবে রাজাপুর ঘোনার ২০ হাজার মানুষের ঝুঁকি নিয়ে দড়ি টানা নৌকায় নদীপার

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

সেতুর অভাবে রাজাপুর ঘোনার ২০ হাজার মানুষের ঝুঁকি নিয়ে দড়ি টানা নৌকায় নদীপার

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ২৬ জুলাই ২০২০

দেশ যখন ডিজিটাল হচ্ছে ঠিক তখনো একটি সেতুর অভাবে পেছনে পড়ে আছে দাগনভূঞা উপজেলার রাজাপুর পূর্ব ঘোনা গ্রামটি। এই গ্রামের তিনদিক থেকে ঘিরে রেখেছে ছোট ফেনী নদী। অনেকটা দ্বীপের মতো রাজাপুর পূর্ব ঘোনা। এই গ্রামের স্কুল,কলেজ ও মাদরাসায় পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীসহ হাজারো মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন দড়ি টানা নৌকা দিয়ে পার হয়ে ফেনী সদরের বিরলী অংশে আসে। নদী পার হতে গিয়ে প্রতিনিয়ত মানুষকে দুর্ঘটনার স্বীকার হতে হয়। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এই নদী পার হওয়া অনেক ঝুকিপূর্ণ। গ্রামবাসীর জন্য উপজেলা ও জেলা শহরে যাতায়েতের সহজ পথ হচ্ছে এটি। এই নদীর স্রােত বেশি হওয়ায় মাঝি দড়ি টেনে নৌকা বাইতে রাজি হয় না। ফলে প্রায়শ ঝড়, বৃষ্টিতে এলাকাবাসীদের চরম কষ্ট পোহাতে হয়। এমনকি রাতে মাঝি না থাকায় নৌকা আরেক পাড়ে থাকে বলে পারাপারে ভোগান্তি পোহাতে হয় গ্রামবাসীদের। ফলে রাজাপুর বাজার হয়ে বিকল্প সড়ক দিয়ে প্রায় ৪ কিলোমিটার ঘুরে বাড়ি যেতে হয়। এটি গ্রামবাসীর জন্য চরম কষ্টকর ও ভোগান্তির। এই গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী প্রতিদিন পাশের ফেনী সদরের  পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের  বিরলী হাই স্কুল ও প্রাইমারী স্কুলে যাতায়েত করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। এছাড়া প্রতিদিন কয়েক হাজার গ্রামবাসী স্কুল,কলেজ, হাসপাতালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজ সারতে জেলা ও উপজেলা শহরে এই নদী পার হয়ে যাতায়েত করে। প্রায়শ ঘটে নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটে বলে এলাকাবাসী জানান। 

এই বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা বলেন ওসমান বলেন, আমরা সব সময় আতঙ্কে থাকি। প্রায় সময় এখানে নৌকা ডুবে যায় পরে মানুষ সাঁতার কেটে নদী পার হয়। স্কুলপড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীদের এটা খুবই বিপদজ্জনক কারণ অনেক ছাত্র ছাত্রীরা সাঁতার জানে না। 

আজিম নামে আরেক বাসিন্দা জানান, রাজাপুর উত্তর ও পূর্ব ঘোনার জন্য বিরলী স্কুল ও বিরলী বাজার কাছে হওয়া, পথচারী ও ছাত্রছাত্রীরা এ নৌকা ঘাটাটি ব্যবহার করে থাকে। এছাড়া নৌকা ঘাটা ছাড়া বিকল্প পথে চলাচলের কথা জানতে চাইলে তিনি জানান, পূর্বঘোনা থেকে বিরলী স্কুল ও বাজার দেড় কিলোমিটার আর রাজাপুর বাজার হয়ে বিরলী ৪ কিলোমিটার। রাজাপুর ঘোনা থেকে রাজাপুর বাজার হয়ে বিরলী গাড়ী ভাড়া জন প্রতি ৪০ টাকা। অথচ নৌকা ঘাট দিয়ে কম সময়ে জন প্রতি ৫ টাকা দিয়ে বিরলী যাওয়া যায়। যার কারণে পথচারী ও স্কুল পড়ুয়া ছেলে মেয়েরা এ নৌকা ঘাটটি ব্যবহার করে থাকে। 

এ বিষয়ে বিরলী স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য কাজী আবিদুর রহমান জানান, সেতুর অভাবে এই গ্রামের মানুষদের সারা বছর দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিশেষ করে স্কুলের কোমলমতি ছাত্রছাত্রী এবং গর্ভবতী মহিলাদের জন্য নৌকা পার হওয়া বেশ ঝুকিপূর্ণ । বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি বেশি থাকায় প্রায়ই নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটে। অতি দ্রুত এখানে সেতু না হলে যেকোনো সময় প্রাণহানি ঘটতে পারে।

বিরলী স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কাজী নজরুল ইসলাম জানান, এই নৌকা ঘাটটির কোন সরকারি নিলাম না থাকায় তিনি  একটি নৌকা কিনে দেন ও মাঝি ঠিক করে দেন। এছাড়া তিনি আরো বলেন, দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে ঠিক তখনই একটি সেতুর অভাবে হাজারো জনগোষ্ঠী পিছিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি দুঃখ জনক।

তাই গ্রামবাসী তাদের কষ্টের কথা বিবেচনা করে ছোট ফেনী নদীর উপর দ্রুত একটি সেতু নির্মাণ করতে ফেনী -২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী ও ফেনী-৩ আসনের সংসদ সদস্য জেনারেল মাসুদ উদ্দিনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।  

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads