• শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪২৮
মৎস খামারের বাঁধে জলাবদ্ধতা, ক্ষতিগ্রস্ত অর্ধশত পরিবার

শেরপুরের নকালার চরবসন্তী মধ্যপাড়া গ্রামের কৃষি জমিতে জলাবদ্ধতার চিত্র

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

মৎস খামারের বাঁধে জলাবদ্ধতা, ক্ষতিগ্রস্ত অর্ধশত পরিবার

  • শেরপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০

শেরপুরের নকলা উপজেলার চরবসন্তী মধ্যপাড়া গ্রামের ভাটিতে দুটি মৎস খামার গড়ে ওঠায় উজানে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে আবাদি জমি হয়েছে অনাবাদি। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন প্রায় অর্ধশত পরিবার। গত বৃহস্পতিবার সরেজমিন গেলে ক্ষতিগ্রস্তের নানা চিত্র তুলে ধরেন গ্রামবাসীরা। তারা জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবি তুলেছেন। তবে প্রশাসন থেকে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় জলাবদ্ধতা নিয়েই বিপাকে পড়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবাররা।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বর্ষাকালে বৃষ্টি ও ‌উজান থেকে নেমে আসা বন্যার পানি নেমে যায় চরবসন্তী মধ্যপাড়া গ্রামের আবাদি জমি দিয়ে। এখানকার প্রায় অর্ধশত একর জমিতে বছরে ৩টি ফসল ফলাতো কৃষকরা। গত দু’বছর যাবত ওইসব জমির পাশে ভাটিতে স্থানীয় দু’ব্যক্তি দু’টি মৎস খামার গড়ে তুলেন। বন্ধ করে দেন পানি নেমে যাওয়ার কালভার্ট। এতে বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় অর্ধশত একর জমির ফসল। দেখা দেয় স্থায়ী জলাবদ্ধতা। অনাবাদি হয়ে পড়ে ওইসব জমি। গ্রামবাসীদের কৃষি কাজের জন্যে চলাচলের সড়কটিও তলিয়ে থাকে পানির নিচে। এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন গ্রামবাসীরা। ফসল ফলাতে না পেরে ক্রমাগত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন প্রায় অর্ধশত পরিবার।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষাণী ফেলানি বেগম বলেন, আমি গত বছর আলুর চাষ করেছিলাম। পানির কারণে সব আলু নষ্ট অইছে। দুইডা মাছের খামার দেওয়ায় পানি যাইতে পারে না। অহন কোনো আবাদ ফসলও করতে পারি না। কেমনে চলমু? ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক সফিকুর রহমান বলেন, এই জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। বছরে তিন ফসল হতো। এখন একটা ফসলও হয়না। এতে আমরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। অনেকে এখন মানবেতর জীবন যাপন করছে। জলাবদ্ধতার চিত্র স্বীকার করে মৎস খামার মালিক মনি মিয়া বলেন, ধান চাষের চেয়ে মাছ চাষে লাভ বেশি। এ জন্য মাছ চাষ করেছি। এদিকে জলাবদ্ধতার কারণে আমরা ড্রেন নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছি। ড্রেন নির্মাণ হলে সহজেই পানি নিষ্কাসন হতো। তারা এতে সম্মতি দেয়নি।

এই জলাবদ্ধতা নিরসনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও গ্রামবাসীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট আবেদন করেছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুর রহমান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব দেন। এ প্রেক্ষিতে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পরেশ চন্দ্র দাস সরেজমিনে পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গ্রামবাসীদের একমাত্র আয়ের উৎস কৃষি। তারা ওইসব জমিতে বছরে তিনটি ফসল করতো। অনেকে সরিষার আবাদ করেছেন। ওইসব জমিতে ইরিবোরো ও আমন চাষ হতো। দুটি মৎস খামার দেয়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া পানি নিষ্কাসনের কালভার্টের মুখ বন্ধ করে দেয়ায় ও পানি নেমে যেতে পারছে না। এতে জলাবদ্ধতায় কৃষকরা ফসল ফলাতে পারছেন না। তবে উপজেলা প্রশাসন থেকে দুটি ড্রেন নির্মাণ করে দিলে এখানকার জলাবদ্ধতা সহজেই নিরসন হবে। আবার ফসল ফলাতে পারবে কৃষকরা। এমনটাই মনে করেন এই কর্মকর্তাসহ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও স্থানীয়রা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads