সোনারগাঁও ( নারায়ণগঞ্জ ) প্রতিনিধি:
সোনারগাঁ ৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে দৈনন্দিন ভর্তি রোগীদের বরাদ্দকৃত খাবার হরিলুট করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ঠিকাদার সাবেক মেম্বার উখিল উদ্দিনসহ একটি চক্রের বিরুদ্ধে। হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীদের যে মানের খাবার দেওয়া হয় তার মান খুব নিম্ন। রোগীদের জন্য সরকার কর্তৃক মাসে দৈনন্দিন তালিকায় যে মেনু রয়েছে তা না দিয়ে পরিমানে কম দিয়ে চক্রটি নিজের পকেট ভারী করতে মরিয়া হয়ে ওঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীদের জন্য প্রতিদিন দুই বেলা চাল বরাদ্দ ১১০ কেজি। অথচ রান্না করা হয় ৩০ থেকে ৩২ কেজি চাল। প্রায় ৭০ কেজির অধিক পরিমাণের চাল কম দিয়ে রান্নার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিসহ চক্রটি বাকী তাদের বাঁচানো চাল নিজের দখলে রেখে সুযোগ বুঝে বিক্রি করে।
শুধু তাই নয়, রান্নার কাজে প্রতিদিন জ্বালানী কাঠ ব্যবহার করার কথা ৩ মণ। সেখানে ব্যবহার হয় অবৈধ গ্যাস, লাকির বরাদ্দকৃত টাকা পুরোটাই ঠিকাদারের পকেটে। সূত্রগুলো আরো দাবি করেন, রোগীদের জন্য রান্নায় পিঁয়াজ, রসুন, আদা প্রতিদিন ২ হাজার টাকা ব্যবহার করার নিয়ম থাকলেও ব্যবহার করা হয় ৩শ’ টাকার মসলা। রান্নায় প্রতিদিন ৩ কেজি তেল দিয়ে রান্নায় খরচ হওয়ার কথা থাকলেও ব্যবহার করা হয় ১ কেজি।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, সাবেক মেম্বার উকিল মিয়া, ওএমএস খাদ্য ভান্ডারের ডিলার পরিচালনার দায়িত্বে আছেন। সে সুযোগে সরকারি খাদ্য ভান্ডার অসহায় গরিব মানুষের চাউল পাচার করে সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপ্লাই দিয়ে থাকেন। যেখানে রোগীদের জন্য মিনিকেট চাল অথবা লতা চাউল দেওয়ার কথা সেখানে ঠিকাদার উকিল মিয়া মোটা চাউল ব্যবহার করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভর্তি রোগীদের জন্য প্রতিদিন সকালে নাস্তায় দু’টি ডিম, দু’শ’ গ্রাম পাউরুটি, দু’টা কলা। অথচ দেয়া হয় ১ডিম, ১টি কলা ও ৫০ গ্রাম পাউরুটি। সপ্তায় দু’দিন খাশির মাংস, মুরগী, রুই মাছ দেয়ার কথা থাকলেও তা দেয়া হয় না।
হাসপাতালে প্রতিদিন ২৫০ রোগীর খাবার থাকার কথা থাকলেও খাবার থাকে মাত্র ৩০/৪০ জনের। ঠিকাদার উকিল মেম্বার এর বিরুদ্ধে খাবারের মান খারাপসহ তার বিরুদ্ধে অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য নয়। তাছাড়া, হাসপাতাল থেকে যত জন রোগীর তালিকা দেওয়া হয় সে অনুযায়ী খাবার পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে হাসপাতালের আরএমও মোশারফ হোসেন সিজান (আবাসিক কর্মকর্তা ) জানান, খাবারের মান ভাল করার জন্য সব সময় সচেষ্ট থাকেন। দুই একটা অভিযোগ উঠতে পারে। আমরা রোগীদের যথাযথভাবে খাবারের তালিকা অনুযায়ী পৌঁছে দিতে চেষ্টা করি তবে ঠিকাদারের দ্বায়িত্ব খাবার তালিকা অনুযায়ী রোগীদের ঠিকমত পৌঁছে দেওয়া।
তাছাড়া তিনি আরো বলেন, হাসপাতালে রোগীদের জন্য খাবারের সরবরাহকারী নিয়োজিত আছে। খাবারের চাহিদা মোতাবেক ও তালিকা অনুযায়ী তাদের কাছে ভর্তিকৃত রোগীদের দৈনন্দিন বরাদ্দকৃত খাবার হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার কথা। তারা তাদের দায়িত্ব পালন করেন। তবে প্রতিদিন রোগীদের যে মানের খাবার দেওয়া কথা তা না দিয়ে চক্রটি নিজের পকেট ভারী করছেন এমন অভিযোগ সকলের মুখে মুখে।