• শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪২৮

সারা দেশ

কাহারোল উপজেলার ভাগ্য আকাশে অন্ধকারে মেঘাচ্ছন্ন, গ্রামবাসীরা আলোর পথ খুঁজছে

  • ''
  • প্রকাশিত ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

দিনাজপুর প্রতিনিধি:

দিনাজপুর কাহারোল উপজেলার ৫ নং ও ৬ নং ইউপির পর্মেশপুর ও গড়নূরপুর মৌজায় সন্ধিস্থল ঢেপা নদী। সেখান থেকে দশ মাইল পশ্চিমে নদীর উপর রয়েছে একটি বাঁশের সাঁকো। কাহারোল উপজেলার মানুষেরা এ পথে যাতায়াত করে। আর ঢেপা নদীটি এই পথ দিয়েই মিলিত হয়েছে পূর্নভবা নদীর সাথে। এই নদীর তীরে ৩০০ পরিবার বসবাস করে। আর এই দুইটি ইউনিয়নের ৭০ হাজার মানুষের যাতায়াতের জন্য একটি মাত্র পাকা সড়ক সেটিও ধ্বংসের পথে।

বন্যা হলে নদীর পাশে বসবাসরত গ্রামবাসীরা পানিতে নিমজ্জিত হন। কিন্তু নদীর বাধ থাকায় গেল বছরে পানিতে কোনো বাড়ি/ঘর ডুবে যায়নি, আর এখানেই একটি বালু মহাল রয়েছে। নিয়েছেন ঠিকাদার রাকিবুল ওয়ারিশ, ভেকু মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন ও মাটিও খুড়ে নিয়ে যাচ্ছেন ডাম্প ট্রাক দিয়ে। ভারি যানবাহন(বারো চাকার ডাম্প ট্রাক) যে পথ দিয়ে যায় সেখানেই পাকা সড়ক ডেবে গিয়ে ভেঙ্গে যাচ্ছে, ভেঙ্গেছে একটি কালভার্টও। সুধু তাই নয় শিডিউলে বেঁধে দেওয়া নিয়মকে অমান্য করে প্রায় ১০ ফিট নিচে খনন করে বালু ও মাটি উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছেন তারা। এত গভীর থেকে মাটি কাটার ফলে নদী রক্ষা বাধ হুমকির মুখে। যেকোনো সময় নদী রক্ষা বাঁধের রাস্তা ধসে যেতে পারে, পানিতে প্লাবিত সমস্যা বেঁড়ে যেতে পারে।

দিনাজপুর শ্রীনিগমানন্দ সেবাশ্রম দাতব্য চিকিৎসালয় প্রতিষ্ঠাতা-পরিচালক ডা. নন্দ দুলাল চক্রবর্তী জানান, গত বছর (১৯ নভেম্বর ২৩) দিনাজপুর কাহারোল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউ,এন,ও) বরাবর,আমিসহ নদী তীরে বসবাসরত গ্রামের ২৩০ জন মানুষের গণস্বাক্ষরিত অভিযোগ দাখিল করি। সাতদিন পর (ইউ,এন,ও) তদন্তের ভার দেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাইদুল ইসলামকে।

কয়েকদিন পরে প্রায় ৫০ জন গ্রামবাসী সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে গেলে আমাদের অভিযোগের বিষয়ে কোনো সুরাহা না করে সেখান থেকে চলে যেতে বলেন। নিরাশ হয়ে ফিরে আসি আমরা। তিনি বলেন, আমাদের কাহারোল উপজেলার ৫ নং ও ৬ নং ইউপির পর্মেশপুর ও গড়নূরপুর বসবাসরত বাসিন্দাদের ভাগ্যা আকাশে মেঘের ঘনঘটা লক্ষ্য করছি,আলোর পথের সন্ধান করছি।

দিনাজপুর দশ মাইল থেকে পশ্চিমে ঢেপা নদীর ঘাট পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার পাঁকা সড়ক রয়েছে, এখানে একটি উচ্চ বিদ্যালয় ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এখানে অধ্যায়নরত ৩৫০ জন ছাত্র/ছাত্রী আছে। একটি সরকার অনুমোদিত দাতব্য চিকিৎসালয় ও হাসপাতাল রয়েছে, একটি সরকারি নিবন্ধিত অনাথ আশ্রম ও একটি বৃদ্ধাশ্রম আছে, প্রার্থনার জন্যে একটি মন্দির আছে, এই প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্য করেই পাকা রাস্তাটি জনগণের জন্য নির্মিত হয়েছে। সেটিকে ধ্বংস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুইটির ছাত্র/ছাত্রীদের পড়াশুনার বিঘ্ন ঘটানো, যান মালের নিরাপত্তা, শব্দ দূষণ, ধুলা/বালি সৃষ্টির ফলে নানাবিধ রোগ ছড়ানো, আবাসিক অনাথ শিশুদের ও বৃদ্ধ/বৃদ্ধাদের ট্রলির বিকট শব্দে পরিবেশের উপর বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। দুর্বৃত্তকারীরা তাদের স্থায়ীও সার্থ চরিতার্থ করার লক্ষ্য নিয়ে এলাকাবাসীর উপর কর্ম তৎপরতা চালাচ্ছে।

বালু মহালের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক দেখা শোনার দায়িত্বে থাকা রফিকুলকে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বলেন, এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাকিবুল ওয়ারিশের, তিনি বর্তমান চেয়ারম্যান বাবলুর শ্যালক। ১৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে অনুমতি নিয়ে আমরা এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছি। ভেঙ্গে যাওয়া কালভার্ট প্রসঙ্গে বলেন, এসময় তিনি বলেন কালভার্ট আমরা নির্মাণ করে দেবো। রাস্তা মেরামতের বিষয়ে কোনো উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান।

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭ টায় দিনাজপুর জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ বলেন, বিষয়টি আমি দেখবো । এসময় কাহারোল উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমিনুল ইসলাম এর সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

/মামুন

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads