• শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪২৮

সারা দেশ

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

বদলে গেছে স্বাস্থ্য সেবা, বেড়েছে চিকিৎসা সেবার মান

  • ''
  • প্রকাশিত ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি:

প্রান্তিক পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ঢেলে সাজানো হয়েছে। কমপ্লেক্সটির পুরো চত্বরজুড়ে বাহারি ফুল আর সবুজের সমারোহ। নিয়ম শৃঙ্খলার উন্নতি ও সেবার মান ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। বর্তমানে হাসপাতালের সেবা নিয়ে স্থানীয় সাধারণ মানুষ সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছে। ৫০ শয্যার এ হাসপাতালে বিগত দিনে চিকিৎসকসহ জনবল সংকট ছিল। বর্তমানে সব সংকট কেটে এখন মডেল হাসপাতালে রুপান্তরিত হয়েছে। এই পরিবর্তনের নেপথ্য কারিগর কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মনজুর-এ-এলাহী। স্বাস্থ্য সেবার আরও উন্নতির জন্য বর্তমানে এখানে রয়েছে দুটি অ্যাম্বুলেন্স।

স্বাভাবিক প্রসব, সিজারিয়ান অপারেশন, প্রসব-পূর্ব ও পরবর্তী সেবা, সম্প্রতি হাসপাতালটিতে এনসিডি কর্ণার, এএনটি কর্ণার, আইএমসিআই কর্ণার, শিশু ওয়ার্ড ও স্যাম কর্ণার, ডে কেয়ার সেন্টার, সেন্ট্র্রাল অক্সিজেন সিস্টেম, প্যাথলজি বিভাগে উন্নতমানের মেশিন সংযোজন, জরুরী বিভাগকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রীত হাসপাতালের গ্যারেজ ও দৃষ্টি নন্দন কনফারেন্স রুম তৈরি করা হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তার সাথের লোকজনের জন্য তৈরি করা হয়েছে বিশ্রামাগার। শুধু তাই নয় হাসাপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল সৃষ্টি করে সেবার মান ব্যাপক উন্নতি করা হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালের এক্স-রে মেশিনটি দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। এটি নিয়ে একাধিকবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে কথা বলেও কোন সুরাহা হয়নি। হাসাপতালে ইসিজি মেশিন থাকলেও ছিল না কার্ডিওগ্রাফার। এখানে ছিলনা কোন আল্ট্রা মেশিন। এমনকি অন্যান্য মেশিনপত্র, প্যাথলজির রে-এজেন্টসহ হাসপাতালের লোকবল। সেই কারণে ডাক্তারদের দেওয়া নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা হাসপাতালের বাহিরে অতিরিক্ত খরচে করতে হতো। সরকারী হাসপাতাল হলেও সাধারণ মানুষের হাতের নাগালের বাহিরে ছিল স্বাস্থ্য সেবা।

যে কারণে সে সময় রোগীর সংখ্যা কমছিল। কিন্তু বর্তমান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মনজুর-এ-এলাহী ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর যোগদানের পর তিনি সকল সমস্যার চেষ্টা করেছেন। তাই আগের চেয়ে রোগীর চাপ বেড়েছে কয়েকগুন। কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হলেও এখানে প¦ার্শবর্তী পলাশ, কাপাসিয়া ও রূপগঞ্জ উপজেলার রোগীরাও আসেন স্বাস্থ্য সেবা নিতে।

সূত্র আরো বলেন, হাসপাতালে সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল পরিচ্ছন্নকর্মী। কারণ তাদের কাজ অনুযায়ী সম্মানী যথাযথ দেওয়া সম্ভব হতো না। এখন সব মিলিয়ে হাসপাতালে ২১ জন পরিচ্ছন্নকর্মী রয়েছে। আগে তাদের সম্মানী ৩ হাজার হলেও এখন তা ৫ হাজার উন্নীত করা সম্ভব হয়েছে। এক সময় কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসার কনসালটেন্ট পদ শূণ্য ছিল। ইউএইচএফপিও’র হস্থক্ষেপে সেগুলো পূরণ করে স্থানীয় রোগীদের স্বাস্থ্য সেবা দেওয়ার চেষ্টা করেন।

এ সময় হাসপাতালে খোলামেলা পরিবেশে টিকা প্রদান করা হলেও ডা. মনজুর-এ-এলাহীর হস্থক্ষেপে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় হয়েছে সুবিশাল টিকা প্রদানের সেট। আগে একটি এ্যাম্বুলেন্স থাকলেও সেটি ছিল অকার্যকর। বর্তমানে দুটি এ্যাম্বুলেন্স রোগীদের সেবা প্রদান করছে। বিদ্যুৎ চলে গেলে ডাক্তাররা রোগী দেখা ও অপারেশন থিয়েটারের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে বিকল্প বিদ্যুৎ ( হেভি জেনারেটর) ব্যবস্থা।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ সৈয়দ মো. শহিদুল ইসলাম জানান, কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আওতায় উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্র, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক এবং স্যাটেলাইট ক্লিনিকগুলো নিয়মিত মনিটরিংয়ের মাধ্যমে মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণ এবং সকলের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ডা. মনজুর-এ-এলাহী স্যার অপরিসীম ভূমিকা পালন করছেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মনজুর-এ-এলাহী বলেন, সকল চিকিৎসক এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য কর্মীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা, উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সার্বিক সহযোগিতায় এ সফলতা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। আমরা আগামীতেও এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে চাই।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads