দলীয় পরিচয়ে নয়, আসন্ন নির্বাচনে সব প্রার্থীকে সমান গুরুত্ব দেওয়ার জন্য নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় জড়িত কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা। গতকাল বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সিইসি এ নির্দেশনা দেন।
সিইসি বলেন, প্রার্থীকে প্রার্থী হিসেবেই বিবেচনা করতে হবে। একজন প্রার্থী যখন নির্বাচনের মাঠে নামবেন তখন নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় জড়িত সরকারি কর্মকর্তাদের তাকে কেবল একজন প্রার্থী হিসেবে দেখতে হবে। কারণ দলের বাইরেও স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে। প্রার্থীরা যখন থেকে নির্বাচনের মাঠে যাবেন তখন থেকে তার পরিচয় প্রার্থী। তখন আর দল বা একক ব্যক্তির কোনো পরিচয় নেই। তিনি শুধু একটি মার্কা বা প্রতীকের প্রার্থী। ফলে তিনি যেই হোন না কেন, যে দলেরই হোন না কেন তাকে অন্য সবার সঙ্গে সমানভাবে দেখতে হবে। একাদশ সংসদ নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক হবে আশাবাদ ব্যক্ত করে নুরুল হুদা বলেন, সারা দেশে সব দলের প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করায় কমিশনের আশাও পূরণ হয়েছে। সিইসি বলেন, আমরা আশা করেছিলাম, একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হবে, সে আশা আমাদের পূরণ হয়েছে। আমরা আশা করেছিলাম, একটা প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সে প্রত্যাশা আমাদের পূরণ হয়েছে। আমরা আশা করেছিলাম, একটা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কার্যালয়ে মনোনয়ন ফরম জমাদানের মধ্য দিয়ে তা স্পষ্ট হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘প্রভাবশালী প্রার্থী স্বতন্ত্র প্রার্থী সবাই সুশৃঙ্খলভাবে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কার্যালয়ে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। কেউ আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ৫-৭ জনের বেশি লোকজন নিয়ে আসেননি। তবে বাইরে অনেকে নেতাকর্মী নিয়ে এসেছিলেন। তা আসলে শোডাউনের পর্যায়ে পড়ে না।’
সিইসি বলেন, ‘আমরা সার্বিকভাবে বিশ্বাস করতে চাই, যারা রাজনীতি করেন, যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা নির্বাচনী আইন, আচরণবিধি মেনে প্রচারণা চালাবেন। সে ধরনের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।’
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষকদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, ‘যারা নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে প্রত্যক্ষভাবে কাজ করবেন তাদের প্রশিক্ষণ দেবেন আপনারা। সেখানে আপনারা নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বার্তা নিয়ে যাবেন। আমাদের নির্বাচনের কার্যক্রম যেভাবে পরিচালিত হয়, তা আপনারা জানেন। কারণ ইতোপূর্বে কোনো না কোনো পর্যায়ে আপনারা নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করেছেন। তাই নির্বাচন কীভাবে করতে হয়, কীভাবে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হয় মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা হিসেবে আপনারা তা ভালোভাবে জানেন। আপনারা মাঠে গিয়ে ৭ লাখ পোলিং এজেন্ট, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও প্রিসাইডিং অফিসারদের প্রশিক্ষণ দেবেন।’
নুরুল হুদা বলেন, ‘নির্বাচনের দায়িত্বে যারা নিযুক্ত থাকবেন তাদের সর্বশেষ ধাপ হচ্ছে রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী ও প্রিসাইডিং অফিসাররা। সরাসরি সম্পৃক্তদের কাছাকাছি আপনারা প্রশিক্ষকরা যাচ্ছেন। তাই আপনাদের ভূমিকাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
অনুষ্ঠানে নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন, ইটিআই মহাপরিচালক মোস্তফা ফারুক প্রমুখ। দিনব্যাপী কর্মশালায় ৪ শতাধিক প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেবে নির্বাচন কমিশন।
ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ : প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার অ্যালিসন ব্লেইক।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় অ্যালিসন ব্লেইক নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে যান। সিইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে দুপুর সোয়া ১২টায় নির্বাচন ভবন ছেড়ে যান। তবে এ সময় তিনি মিডিয়ার সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।