• শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪২৮
সরকারি প্রতিষ্ঠানেও প্রি-পেইড মিটার বসানোর পরিকল্পনা

বিদুৎ প্রি-পেইড মিটার

সংগৃহীত ছবি

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

সরকারি প্রতিষ্ঠানেও প্রি-পেইড মিটার বসানোর পরিকল্পনা

ডিপিডিসির ১০ বছর পূর্তি

  • রানা হানিফ
  • প্রকাশিত ১৪ জুলাই ২০১৮

বকেয়া বিলের ঝুঁকি, সিস্টেম লস ও ভোগান্তি কমাতে সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থায় প্রি-পেইড মিটার প্রবর্তনের পরিকল্পনা নিয়েছে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি)। পাশাপাশি প্রযুক্তিগত উন্নয়নের অংশ হিসেবে গ্রাহক পর্যায়ে স্মার্ট মিটার স্থাপনের সিদ্ধান্তও রয়েছে তাদের। সংস্থার মাঠ পর্যায় থেকে পরিচালন পর্ষদ পর্যন্ত স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্স অবস্থান নেওয়া হচ্ছে।

ডিপিডিসির দশ বছর এবং নিজের দায়িত্বের বছরপূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশের খবরকে এসব পরিকল্পনার কথা জানান ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী বিকাশ দেওয়ান।

কোম্পানি আইনের অধীনে ২০০৫ সালের ২৫ অক্টোবর ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি গঠন করা হলেও কার্যক্রম শুরু হয় ২০০৭ সালের ১৪ মে থেকে। বিলুপ্ত ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই অথরিটির রেখে যাওয়া ৬ লাখ ৫৫ হাজার ৯০৮ গ্রাহক নিয়ে ২০০৮ সালের ১ জুলাই বাণিজ্যিকভাবে সেবাদান শুরু করে ডিপিডিসি।

ডিপিডিসি সূত্রে জানা যায়, সংস্থাটি গঠনের শুরুতে বিদ্যুতের সিস্টেম লস ছিল ১৯, যা গত ১০ বছরে কমে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৭। লোকসানি একটি প্রতিষ্ঠান (ডেসা) গত অর্থবছরে (২০১৬-১৭) ৩২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা মুনাফা করেছে। এ ছাড়া ডিপিডিসি সিডি, ভ্যাট, এআইটি, ডিএসএল, লাইসেন্স ফি, রেভিনিউ স্ট্যাম্প বাবদ সরকারের কোষাগারে ৬৭২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা জমা দিয়েছে। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের ৩৫০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় সেবা দেওয়া ডিপিডিসির গ্রাহক সংখ্যা বর্তমানে প্রায় ১২ লাখ। এর মধ্যে ২ লাখ ৭০ হাজার গ্রাহক এসেছে প্রিপেইড মিটারের অধীনে। তুলনামূলক চিত্রে এটি সরকারের অন্যান্য বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে শীর্ষে। বর্তমানে ডিপিডিসির আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুতের মোট চাহিদা ১ হাজার ৫৩১ মেগাওয়াটের বিপরীতে উপকেন্দ্রের ক্ষমতা রয়েছে ২০ হাজার ৭২ মেগাওয়াট। বর্তমানে ৩৬টি নেটওয়ার্ক অপারেশন অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিস (এনওসিএস) স্টেশনের মাধ্যমে সেবা প্রদান করছে সংস্থাটি।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২০ সালের মধ্যে সব গ্রাহকের কাছে প্রিপেইড মিটার পৌঁছে দিতে চায় ডিপিডিসি। পাশাপাশি সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাগুলোকেও প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনতে চায় বিদ্যুৎ বিতরণকারী এই সংস্থাটি।

ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী বিকাশ দেওয়ান বলেন, অনেক সফলতা, ব্যর্থতা, প্রতিকূলতার মধ্যেও সংস্থাটি একটা অবস্থান তৈরি করতে পেরেছে। বিদ্যুতের সিস্টেম লস কমিয়ে আনা, বকেয়া আদায়, বিদ্যুৎ চুরি রোধ, সব পর্যায়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে এই অবস্থানে আসা সম্ভব হয়েছে।

তিনি বলেন, সাধারণ গ্রাহক পর্যায়ে আগে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়ে থাকত। সেগুলো আমরা আদায় করে পরিমাণ অনেক কমিয়ে এনেছি। প্রিপেইড মিটার স্থাপনের ফলে সিস্টেম লস ও বকেয়া বিলের ঝুঁকি অনেক কমে গেছে। সিটি করপোরেশন, ওয়াসা, রাজউক, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দফতর, অধিদফতরের মতো সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোতেও আমরা প্রিপেইড মিটার বসাব। কারণ এখনো পর্যন্ত এ ধরনের সংস্থার কাছেই আমাদের সর্বোচ্চ বকেয়া পড়ে আছে। প্রিপেইড মিটারের আওতায় এলে এই ঝুঁকি থাকবে না।

বিকাশ দেওয়ান বলেন, বর্তমানে যে প্রিপেইড মিটারগুলো বসানো হচ্ছে এগুলোতে ওয়ানওয়ে ইনপুট ব্যবস্থা রয়েছে। আমরা আট লাখ স্মার্ট মিটারের চাহিদাপত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। প্রস্তাবটি একনেকে পাস হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। এই মিটারগুলোতে টু-ওয়ে ইনপুটের ব্যবস্থা থাকবে। এতে করে গ্রাহকের যে সমস্যা সেটা আমরা দ্রুত শনাক্ত ও সমাধান করতে পারব। পাশাপাশি মিটার টেম্পারিং, বিদ্যুৎ চুরির মতো ঘটনাও ধরা পড়বে।

ডিপিডিসির কার্যক্রমে স্বচ্ছতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রতিটি বোর্ড মিটিং, ট্রেনিং সেশনে কাজের স্বচ্ছতার ব্যাপারে সবাইকে বলা হয়। যখনই কোথাও কোনো অনিয়মের ঘটনা ঘটে বা অভিযোগ আসে তখন তদন্ত করে বিভাগীয় আইন অনুযায়ী শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়।

ডিপিডিসির এক দশক পূর্তি উপলক্ষে বিশেষ সেবা সপ্তাহের আয়োজন করছে সংস্থাটি। বিশেষ এই সেবা সপ্তাহে গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী সংযোগ প্রদান, অভিযোগ গ্রহণ ও তার সমাধান এবং গ্রাহক পর্যায়ে গণশুনানি হবে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads