প্রথমবারের মতো জেলখানায় বন্দিদের ব্যবহারে বালিশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার আইজি প্রিজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীনের উপস্থিতিতে কাশিমপুর কারাগারে বালিশ বিতরণ করা হয়। এ ছাড়া নেত্রকোনা ও ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারেও বন্দিদের বালিশ বিতরণ করা হয়। পর্যায়ক্রমে দেশের সব কারাগারে বন্দিদের বালিশ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।
কাশিমপুর কারাগারে বিতরণ অনুষ্ঠানে আইজি প্রিজন বলেন, ‘কারা ইতিহাসে এই প্রথম বন্দিদের মাঝে বালিশ বিতরণ করা হলো। ইতোপূর্বে প্রত্যেক বন্দি তিনটি কম্বল পেত, যার একটি বালিশ হিসেবে ব্যবহার হতো।’ অল্প সময়ের মধ্যে বন্দিদের খাবারের মান উন্নয়ন হবে বলেও জানান আইজি প্রিজন ইফতেখার।
‘সহসাই কারাগারে বন্দিদের সকালের নাশতা পরিবর্তন করা হচ্ছে। আগের রুটির সঙ্গে শুকনা গুড়ের পরিবর্তে সবজি, হালুয়া এবং খিচুড়িসহ সপ্তাহের একেক দিন একেক আইটেম নাশতা সরবরাহের ব্যবস্থা করা হবে।’ ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বন্দিদের নাশতার ব্যয় হিসাব করে আর্থিক অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আশা করি এর অনুমোদন ও বাস্তবায়ন অতি শিগগিরই হবে।’
এখনো ব্রিটিশ আমলের আইনকানুন অনুয়ায়ী দেশের কারাগারগুলো পরিচালিত হচ্ছে। কারাগারগুলোকে সংশোধনাগার হিসেবে পরিচালিত করতে আরো কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং এজন্য নীতিমালা ও আইনের কিছু পরিবর্তন করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। ‘সে আইন পরিবর্তিত হচ্ছে এবং সেটার জন্য ইতোমধ্যে খসড়া নীতিমালা ও আইন লেখা হয়েছে। ওই নীতিমালা পার্লামেন্টে অনুমোদন পেলে আমরা তা বাস্তবায়ন করতে পারব।’
ইফতেখার আরো বলেন, স্বজনদের সঙ্গে ১৫ দিন অন্তর কারাবন্দিরা টেলিফোনে কথা বলার সুযোগ পাবেন। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে সরকারিভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। দেশে ৬৮টি কারাগারে বুথ স্থাপনের কাজ শেষ হলেই কারাবন্দিরা সে সুযোগ পাবেন।
এ ছাড়া কারাবন্দিদের তৈরি করা পণ্য ও দ্রব্য বিক্রি করে যে লভ্যাংশ পাওয়া যায়, তার অর্ধেক অর্থও পারিশ্রমিক হিসেবে বন্দিদের দেওয়া হবে। এর আগে তিনি বন্দিদের সম্পর্কে খোঁজখবর নেন এবং কারাগার পরিদর্শন করেন।
এ সময় কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর সিনিয়র সুপার সুব্রত কুমার বালা, কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারের জেলার বিকাশ রায়হান, ডেপুটি জেলার তারিকুল ইসলামসহ কারা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আইজিপি এদিন ওই অনুষ্ঠানে বন্দিদের জন্য কয়েকটি টিভি সেটও সরবরাহ করেন।
এআইজি (অর্থ) সুরাইয়া আক্তার বলেন, কাশিমপুরের চারটি, নেত্রকোনা জেলা কারাগার এবং ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে এ বালিশ বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়েছে।