জেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মোহাম্মদ সাহেদের ২৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
একই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসুদ পারভেজকে পাঠানো হয়েছে ২১ দিনের রিমান্ডে।
রোববার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে রিমান্ড শুনানিকালে সাহেদ বলেছেন, ‘আমি তো অন্যায় করেছি। সব অপরাধের সাথে আমি জড়িত। যারা আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে, তাদের সব টাকা-পয়সা পরিশোধ করব।’
মো. সাহেদ বলেন, ‘গত ১২-১৩ দিন ধরে আমি কী অবস্থার মধ্যে আছি। আমি আর পারতেছি না। প্রেসারের মধ্যে আছি। আমি অসুস্থ।’
এক পর্যায়ে ঈদের পর রিমান্ড শুনানির তারিখ ধার্য করার আবেদন জানান আসামি সাহেদ।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা এর বিরোধিতা করে বলেন, ‘বিনা টাকায় করোনা পরীক্ষা করার কথা থাকলেও আসামি রোগীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছে। সে একজন মহাপ্রতারক। অসুস্থ না হয়েও গত ১৬ জুলাই আদালতে সে নিজেকে করোনা রোগী বলে দাবি করে। আসামি আষাঢের গল্প বলছে। পুলিশ তার যে রিমান্ড চেয়েছে, আমরা তা মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।’
আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে রিমান্ডের আদেশ দেন।
এদিকে, আজ রিজেন্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসুদ পারভেজকে পৃথক তিন মামলায় ২১ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।
সেই রিমান্ড শেষে সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় তিন ও উত্তরা পূর্ব থানায় প্রতারণার এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১০ দিন করে মোট ৪০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে তাদের আদালতে হাজির করা হয়।
গত ১৬ জুলাই সাহেদ ও মাসুদ পারভেজের ১০ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
রবিবার ওই মামলায় রিমান্ড শেষে তাদের আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে পুলিশ। একই আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের দুই মামলায় সাহেদকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে পুলিশ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোর্শেদ আল মামুন ভূঁইয়া গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। সাড়ে ১২টার দিকে তাদের আদালত থেকে নিয়ে যাওয়া হয়।
পরীক্ষা ছাড়াই করোনার সনদ দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে ১৫ জুলাই বুধবার ভোরে সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার করা হয় সাহেদকে।
এদিকে, সাতক্ষীরার দেবহাটা থানার অস্ত্র আইনের মামলায় সাহেদ করিমের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
রবিবার দুপুরে দেবহাটা আমলী আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব কুমার রায় ভার্চুয়াল আদালতে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
কোর্ট ইন্সপেক্টর অমল রায় ও এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব-৬ এর এস আই রেজাউল করিম আদালতের কাছে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন।
এর আগে ১৬ জুলাই ঢাকার এক আদালত সাহেদ ও মাসুদকে আইন প্রয়োগকারীদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিন মঞ্জুর করেন।
দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে সাহেদকে সাতক্ষীরা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পাভেজকে ১৪ জুলাই গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
১৪ জুলাই সাহেদের তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে একজন পরিবহন রপ্তানিকারকের কাছ থেকে ৯১ লাখ টাকার বেশি আত্মসাৎ করার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল।
রিজেন্ট গ্রুপের প্রধান কার্যালয় এবং এর উভয় হাসপাতালই পরে সিল করে দেয়া হয় এবং করোনাভাইরাস পরীক্ষার জাল সনদ দেয়ার অভিযোগে এর চেয়ারম্যানসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
সূত্র: ইউএনবি