মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে পরিপত্র জারি হওয়ায় ৪০তম বিসিএসে কোটা রাখছে না সরকারি কর্ম কমিশন-পিএসসি।
আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক গণমাধ্যমকে একথা জানান।
পিএসসি চেয়ারম্যান বলেন, আমরা ৪০তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তিতে বলেছিলাম কোটা বিষয়ে সরকারের সর্বশেষ গ্রহণ করা সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই বিসিএসের মাধ্যমে ক্যাডার নিয়োগ হবে। সেই সিদ্ধান্ত অনুসারে এই বিসিএসে কোটা নয় মেধা থেকে নিয়োগ হবে।' এ ছাড়া কয়েকটি নন ক্যাডার নিয়োগের ক্ষেত্রেও কোটার সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুসারে নিয়োগ দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, তবে যেসব নিয়োগ আগের, যেমন ৩৯তম বিশেষ বিসিএসে ক্যাডার নিয়োগের ক্ষেত্রে আগের কোটা নীতি ব্যবহার করা হবে।
পিএসসি চেয়ারম্যান জানান, ৪০তম বিসিএসে মোট ১ হাজার ৯০৩ জন ক্যাডার নেওয়া হবে। পিএসসি সূত্র জানিয়েছে, ৪০তম বিসিএসের মাধ্যমে প্রশাসন ক্যাডারে ২০০, পুলিশে ৭২, পররাষ্ট্রে ২৫, করে ২৪, শুল্ক আবগারিতে ৩২ ও শিক্ষা ক্যাডারে প্রায় ৮০০ জন নিয়োগ দেওয়া হবে। মোট ১ হাজার ৯০৩ জন ক্যাডার নিয়োগ দেওয়া হবে। তবে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
৪০তম বিসিএসে অংশ নিতে গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণ করে তা জমা দিতে পারছেন চাকরিপ্রার্থীরা। আগামী ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবেদনপত্র জমা দেওয়া যাবে।
মন্ত্রিসভায় কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত হওয়ার পর বুধবার মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন,প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ইতোমধ্যে যেসব বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে যদি বলা থাকে যে ‘কোটার বিষয়ে সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে সে অনুযায়ী হবে’, তবে ওইসব নিয়োগেও কোটার বিষয়টি থাকবে না।
এদিকে আজ বৃহস্পতিবার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে প্রবেশে কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ফয়েজ আহম্মদ স্বাক্ষরিত ওই আদেশে বলা হয়, সরকার সব সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত/আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন কর্পোরেশনের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ১৭-০৩-১৯৯৭ তারিখের সময় (বিধি-১)এস-৮/৯৫(অংশ-২)-৫৬(৫০০) নং স্মারকে উল্লিখিত কোটা পদ্ধতি নিম্নরূপভাবে সংশোধন করিল:
ক) ৯ম গ্রেড (পূর্বতন ১ম শ্রেণি) এবং ১০ম-১৩তম গ্রেডের (পূর্বতন ২য় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রদান করা হইবে; এবং
খ) ৯ম গ্রেড (পূর্বতন ১ম শ্রেণি) এবং ১০ম-১৩তম গ্রেডের (পূর্বতন ২য় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হইল।
২। ইহা অবিলম্বে কার্যকর করা হইবে।
এর আগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ১৭ সেপ্টেম্বর সরকারি চাকরিতে নবম থেকে ত্রয়োদশ গ্রেড পর্যন্ত, অর্থাৎ প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের সুপারিশ করে মন্ত্রীপরিষদ সচিব শফিউল আলমের নেতৃত্বাধীন কমিটি। সচিব কমিটি মোট তিনটি সুপারিশ করেছিল। পরে তা অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন শেষে তা আসে মন্ত্রিসভায়। এরপর বুধবার সকালে সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।