রাজধানীর নিউমার্কেটে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ী ও দোকান কর্মচারীদের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগের মামলায় গ্রেপ্তার বিএনপি নেতা অ্যাড. মকবুল হোসেনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ শনিবার (২৩ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদের আদালত শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন।
এর আগে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিউমার্কেট থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) হালদার অর্পিত ঠাকুর আসামিকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, গত ১৯ এপ্রিল রাত পৌনে একটা থেকে রাত ২টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত অজ্ঞাতনামা ৬০০-৭০০ জন ঢাকা কলেজের ছাত্র এবং নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীসহ অজ্ঞাতনামা ২০০-৩০০ জন ব্যবসায়ী-কর্মচারী নিউমার্কেট থানাধীন চন্দ্রিমা মার্কেটের সামনে পুলিশের সরকারি কাজে বাধা প্রদান করে। পুলিশের ওপর আক্রমণ, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে জখম, ভাঙচুর করার অপরাধ করেছে।
মামলার সুষ্ঠু তদন্ত, মূল রহস্য উদঘাটন, এজাহারনামীয় আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আসামিদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ পূর্বক গ্রেপ্তারের লক্ষে আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
আসামিপক্ষে ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি ইকবাল হোসেন, সাহেল আকরাম সম্রাট, আবুল কালাম আজাদ রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।
শুনানিতে তারা বলেন, ‘মকবুল হোসেন নির্দোষ। সম্পূর্ণ পরিস্থিতির শিকার। তিনি ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত না। তার বিরুদ্ধে এজাহারে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। রিমান্ড বাতিল চেয়ে তার জামিন প্রার্থনা করছি।’
রাষ্ট্রপক্ষে হেমায়েত উদ্দিন খান (হিরণ) এর বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত মকবুল হোসেনের তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
এর আগে, শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডির বাসা থেকে মকবুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ১৮ এপ্রিল দিনগত রাত ১২টার দিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের সংঘর্ষ হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা চলে এ সংঘর্ষ। এরপর রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলেও ১৯ এপ্রিল সকাল ১০টার পর থেকে ফের দফায় দফায় শুরু হয় সংঘর্ষ, যা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
এ ঘটনায় উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক আহত হন। সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত দুজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তাদের একজন ডেলিভারিম্যান, অন্যজন দোকানকর্মচারী।
ডেলিভারিম্যান নাহিদের নিহতের ঘটনায় বাবা মো. নাদিম হোসেন বাদী হয়ে নিউমার্কেট থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। মুরসালিনের ভাই বাদী হয়ে আরো একটি হত্যা মামলা করেছেন।
এদিকে, এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা করে। একটি মামলা বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে এবং অন্যটি পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে। দুই মামলাতে নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ী, কর্মচারী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীসহ মোট ১২ শ’ জনকে আসামি করা হয়েছে।