নেত্রকোণার কলমাকান্দায় গত বৃহস্পতিবার থেকে আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত বৃষ্টি কম হওয়াতে এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানির চাপ কম থাকায় ধীরগতিতে তৃৃতীয় বন্যার পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে প্লাবিত এলাকার মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। ঘরবাড়ির চারপাশে এখনও পানি থাকায় কার্যত প্রায় ৫০টি গ্রামের পানিবন্দি হয়ে আছেন প্রায় ২০ হাজার মানুষ। উপজেলা জুড়ে যে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে, প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয় বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
ভেঙে পড়েছে উপজেলার সদরের সাথে অভ্যন্তরীণ যোগযোগ ব্যবস্থা। এদিকে নেত্রকোণা জেলার সঙ্গে কলমাকান্দা সড়কে যান চলাচল পুরোপুরি চালু হয়নি। এ বন্যার পানিতে উপজেলার রাস্তাগুলোর বুকে দেখা দিয়েছে খানা-খন্দ, ছোট-বড় গর্ত ও ক্ষতের।
এদিকে নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপক (গেজ রিডার) মো. মোবারক হোসেন সমকালকে জানান , কলমাকান্দা প্রধান নদী উব্দাখালী নদীর পানি কমে বিপদসীমার ২৩ সে.মি. নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ২৭ জুলাই সোমবার সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত।
সরেজমিন পর্যবেক্ষণে দেখা যায় , উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানিতে তলিয়ে যাওয়ার প্রায় ২৫ কি.মি. রাস্তা-ঘাট ভেসে উঠতে শুরু হলেও উপজেলার সাথে যোগাযোগের অভ্যন্তরীণ রাস্তাগুলোর ওপর দিয়ে এখনোও কোথাও কোথাও ১-২ ফুট বন্যার পানি বয়ে যাচ্ছে। তবে ওইসব এলাকায় এ বন্যায় পানির তীব্র স্রোতে ব্রীজের সংযোগ সড়কের মাটি ধসসহ গ্রামীন পাঁকা ও কাঁচা রাস্তাগুলোর অধিকাংশই ভেঙে গেছে।
টানা তিনবারে বন্যায় উপজেলার ৩২০ একর আমন বীজতলা, ৫১০ একর আউশ জমি পানিতে তলিয়ে যায়। টানা তিনবারে পাহাড়ি ঢলের বন্যায় প্রায় ৩ হাজার ৬০০ পুকুরের মধ্যে প্রায় দুই হাজার ৫০০ পুকুর পানিতে তলিয়ে সম্পূর্ণ মাছ বেরিয়ে যাওয়ায় স্থানীয় কৃষক ও মৎস্য চাষীরা দিশেহারা। তবে উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বন্যার পানি পুরোপুরি নেমে গেলে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্ক ধারণা করা যাবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) মো. সোহেল রানা প্রতিবেদককে জানান বন্যার পরিস্থিতির মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসনের সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান , এ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ১১০ মে. টন জিআর চাল ও চারশ’ শুকনো খাবার প্যাকেট এবং নগদ ৪ লাখ টাকা জেলা প্রশাসন থেকে আমরা বরাদ্দ পেয়েছি। যা পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হচ্ছে।