ছোটপর্দার মডেল-অভিনেত্রী নোভা ফিরোজ। তার রূপ-সৌন্দর্যের গুণে খুব স্বল্প সময়ের মধ্যেই শোবিজ অঙ্গনে সবার নজর কাড়েন। অভিনয়ের ষোলোকলা রপ্ত করে তিনি প্রতিনিয়ত এগিয়ে চলছেন। নোভা ফিরোজ মাঝে কিছু সময় অনিয়মিত ছিলেন অভিনয়ে। সম্প্রতি ফিরেছেন পুরনো আবহে। নিয়মিত কাজ করছেন টিভিসি ও নাটকে। শুধু তা-ই নয়, ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো চলচ্চিত্রেও নাম লিখিয়েছেন। এবার নতুন খবর জানালেন এই অভিনেত্রী। গত সপ্তাহে একটি বিজ্ঞাপনের শুটিং শেষ করলেন। এতে তাকে দেখা যাবে মোশাররফ করিমের সঙ্গে। ‘ক্যারিয়ারে অনেকবারই মোশাররফ ভাইয়ের সঙ্গে জুটি হয়ে নাটকে অভিনয় করেছি। তবে কখনোই বিজ্ঞাপনে কাজ করা হয়নি। সেই আক্ষেপটা এবার দূর হলো। আমরা প্রথমবার একসঙ্গে বিজ্ঞাপনে হাজির হতে যাচ্ছি,’ বললেন নোভা।
আরো জানান, টোস্টার প্রডাকশন হাউসের ব্যানারে নির্মিত এই টিভিসিটি কনক্রিট মিক্সারের। শিগগিরই টিভি চ্যানেলসহ নানা মাধ্যমে প্রচারে আসবে এটি।
প্রসঙ্গত, নোভা অভিনীত প্রথম সিনেমার নাম ‘মৃধা ভার্সেস মৃধা’। ছবিটি পরিচালনা করছেন রনি ভৌমিক। এ সিনেমায় নোভার সঙ্গে দেখা যাবে সিয়াম আহমেদকে। আরো থাকছেন তারিক আনাম খান, নিমা রহমান, সানজিদা প্রীতি প্রমুখ।
এই অভিনেত্রী ডিজিটাল প্ল্যাটফরম নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, ডিজিটাল প্ল্যাটফরম শিল্পীদের কাজের ক্ষেত্র বাড়িয়েছে। একটা সময় টেলিভিশনের বাইরে কাজ করার সুযোগ ছিল না। ডিজিটাল প্ল্যাটফরমের কারণে প্রত্যেক শিল্পীর কাজ বেড়েছে। সামনেও হয়তো বাড়বে। তা ছাড়া বিভিন্ন ধরনের কাজের সুযোগ এখানে রয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমি মনে করি ওয়েব সিরিজ দেখার সময় আন্তর্জাতিক বিষয়টি মাথায় রাখা প্রয়োজন। আমিও এর মধ্যে দুটি সিরিজ দেখেছি। আমার কাছে ভালো লেগেছে একটি। আর অন্যটি মনে হয়েছে গল্পের প্রযোজনের চেয়ে বেশি দেখানো হয়েছে।
নোভার প্রথম টেলিভিশনে আসা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে। ২০০৫ সালে প্রাণ ডালের সেই বিজ্ঞাপনচিত্রে অভিনয় করে তিনি খ্যাতি লাভ করেন। জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থেকেই তিনি কাজ করতে থাকেন আরো অনেক বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেল হিসেবে। এরপর আসেন নাটকে। ২০০৬ সালে ইউ গট দ্য লুক প্রতিযোগিতায় বেস্টলুক ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ানের খ্যাতি লাভ করেন।
সে বছরই খ্যাতিমান নির্মাতা অনিমেষ আইচ পরিচালিত ‘প্রেম ও ঘামের গল্প’ নাটক দিয়ে নাটকে অভিনয় শুরু করেন। এরপর নোভাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। তার অভিনীত নাটক যেমন পেয়েছে দর্শকপ্রিয়তা ঠিক তেমনি আকৃষ্ট করতে পেরেছে নাটকবোদ্ধাদের।
তার হাইড অ্যান্ড সিক, লাভলি মাইন্ড, খুঁজে বেরাই তারে, সঙ, বৃষ্টি আর কাঁদবে না-নাটকগুলো বহুল প্রচারিত। এ প্রজন্মের অন্যতম এই অভিনেত্রীর অন্যতম কাজের মধ্যে রেদোয়ান রনির হাউসফুল, অরণ্য আনোয়ারের বন্ধু বটে, আসিক মাহমুদের পাগলা হাওয়া, আলভি আহমেদের দ্যা জেনারেশন ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়।
নোভা তার অভিনয়জীবনে পেয়েছেন নানা সম্মাননা। ২০০৭ সালে ‘ইনডেক্স-ডিসিআরইউ (ঢাকা কালচারাল রিপোর্টার্স ইউনিটি) শোবিজ অ্যাওয়ার্ড, ২০০৭’ অর্জন করেন শ্রেষ্ঠ মডেল (নারী) হিসেবে।
২০০৭ সালেই সেরা উদীয়মান অভিনেত্রী হিসেবে সিজেএফবি অ্যাওয়ার্ড পান। ২০০৮ সালে টেলিভিশন বিভাগে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা (নারী) হিসেবে পুরস্কৃত হন ‘ডেসটিনি-ডিসিআরইউ (ঢাকা কালচারাল রিপোর্টার্স ইউনিটি) শোবিজ অ্যাওয়ার্ড ২০০৮’-এ।
নোভা শ্রেষ্ঠ নারী মডেলের খেতাব পেয়েছেন বেস্ট স্টাইল পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড-২০০৮ এবং জনতা স্টার অ্যাওয়ার্ড ২০০৮-এ। এ ছাড়া ২০০৮ সালের পিডিসিএল বাবিসাস অ্যাওয়ার্ড-২০০৮-এ তিনি এক বিরল সম্মাননা অর্জন করেন। তাকে টেলিভিশন বিভাগ ক্যাটাগরিতে প্রজন্মের সেরা অভিনেত্রী হিসেবে সম্মাননা দেওয়া হয়।
অভিনয়ের পাশাপাশি করপোরেট জগতেও নোভার পদচারণা রয়েছে। লেভেল থ্রি ক্যারিয়ার নামে প্রডাকশন হাউজের কমিউনিকেশন ও করপোরেট অ্যাফেয়ার্সের প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন নোভা। নোভার এখন পর্দার পেছনেই কাজ করা হচ্ছে বেশি।