দেশের শীতলতম স্থান হিসেবে পরিচিত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে জেঁকে বসেছে শীত। চলতি নভেম্বর মাসের প্রথম থেকে সেখানে শীতের আবহ শুরু হলেও শেষ দিকে এসে রীতিমতো বদলে গেছে প্রকৃতি। তাপমাত্রা নেমে গেছে প্রায় ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। গাছের পাতায় লেগেছে হলুদের আভা। ধূসর কুয়াশায় ঢাকা চা বাগান সকাল-সন্ধ্যা পাচ্ছে মায়াবী রূপ। এলাকার জলাশয়গুলো মুখর শীতের পাখির কলতানে।
গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর বুধবার সেখানে এ বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ১১ দশমিক দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস। শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা ও সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করে ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদফতরের সিনিয়র অবজারভার মো. হারুনুর রশীদ জানান, গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা শ্রীমঙ্গলে ১১ দশমিক তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। বুধবারও সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন।
এদিকে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিচিত্র হতে শুরু করেছে প্রকৃতির রূপ। চা বাগানের সারি সারি ছায়গাছগুলো সকাল-সন্ধ্যা ঢাকা পড়ছে ধূসর কুয়াশার চাদরে। শ্রীমঙ্গলের প্রসিদ্ধ পাখির অভয়ারণ্য বাইক্কা বিলসহ হাওর, বিল, জলাশয় ও চা বাগানের লেকগুলোয় আসতে শুরু করেছে অতিথি পাখি। তাদের কলতানে মুখরিত পুরো এলাকা। প্রকৃতির এই রূপের সুধা পান করতে পর্যটকদের ভিড়ও বাড়তে শুরু করেছে সবুজ-ঘন চা-বাগানগুলোয়।
এদিকে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস মনে করছে আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই এই তাপমাত্রা নেমে যাবে আরো নিচে। পড়বে হাড় কাঁপানো শীত। নিম্নআয়ের মানুষ ও চা শ্রমিকদের মধ্যে দেখা দেবে নানা রোগের প্রকোপ।
প্রতিবছরই তীব্র শীতে বেশি কষ্ট পান উপজেলার চা শ্রমিকরা। চলতি মৌসুমের শুরুতেও তীব্র শীতের কবলে পড়েছেন হাজার হাজার চা শ্রমিক। শীতের মোকাবেলায় যার যার মতো করে নিতে শুরু করেছেন প্রস্তুতি। যাদের শীত নিবারণের মতো বস্ত্র নেই তারা তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করেই যাচ্ছেন কাজে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শীত-কবলিত বিভিন্ন চা বাগান এলাকায় এখনো সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে সেখানে পৌঁছায়নি কোনো শীতবস্ত্র। তবে খুব শিগগরিই শীতার্তদের মাঝে প্রায় দুই হাজার কম্বল বিতরণ করা হবে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আছাদুজ্জামান জানান, ইতোমধ্যে উপজেলার শীতার্ত মানুষের মধ্যে বিতরণের জন্য দুই হাজার কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। খুব শিগগির এসব কম্বল শীতার্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে।