• শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪২৮

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ

মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল দাবি

‘রাজাকারের সন্তানদের চাকরিতে নিষেধাজ্ঞা চাই’

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২২ এপ্রিল ২০১৮

সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা বহাল রাখার পাশাপাশি স্বাধীনতাবিরোধীদের উত্তরসূরিদের সরকারি চাকরিতে নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মাঠে নেমেছে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের সংগঠন ‌‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’। গতকাল শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক গণসমাবেশ থেকে তারা এ দাবি করেন।

গণসমাবেশে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা এখন থেকে বিসিএস প্রিলিমিনারি থেকেই মুক্তিযোদ্ধা কোটা কার্যকর করাসহ আট দফা দাবি তুলে ধরেন। তবে নতুন করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা না করলেও আট দফা দাবি আদায়ে মাঠে থাকার ঘোষণা দেন তারা। সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল রাজধানীর শাহবাগ এলাকায়। তবে সেখানে পুলিশ অনুমতি না দেওয়ায় কর্মসূচিটি পালন করা হয় জাতীয় প্রেস ক্লাবে। কর্মসূচিতে দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধীসহ স্বাধীনতাবিরোধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করারও দাবি জানানো হয়। সেই সঙ্গে সরকারি চাকরিতে আগের মতোই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করে সেই কোটা বিসিএসের প্রিলিমিনারি থেকেই কার্যকর করার দাবি জানানো হয়।

সমাবেশে অংশ নিয়ে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আ ক ম জামাল উদ্দিন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কাজী সাইফুদ্দিন, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক রাশেদুজ্জামান শাহীন, যুগ্ম সম্পাদক আল আমিন, দফতর সম্পাদক আহমাদ রাসেল, শহীদ নুরুল হক হাওলাদারের মেয়ে জোবায়দা হক অজন্তা প্রমুখ।

তারা বলেন, স্বাধীনতাবিরোধীদের মতো তাদের উত্তরসূরিরাও মুক্তিযুদ্ধ এবং বাংলাদেশকে মেনে নিতে পারেনি। বার বার এর প্রমাণ পাওয়া গেছে। তারা প্রশাসনে গিয়ে নানা সময় অন্তর্ঘাতমূলক কাজ করছে। তারা একটি বিশেষ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করে। এ কারণে এদের নিয়োগ বন্ধ করতে হবে। একজন বক্তা বলেন, কোটা সংস্কারের আন্দোলন ছিল মূলত মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের আন্দোলন। এ আন্দোলনে নিজেকে রাজাকারও ঘোষণা করা হয়েছে। এই ঔদ্ধত্য মেনে নেওয়ার মতো নয়। এতেই স্পষ্ট হয়, এ আন্দোলনে রাজাকারের বাচ্চাদের অংশগ্রহণ ছিল। আমরা তাদের সরকারি চাকরিতে দেখতে চাই না।

সমাবেশে ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’-এর সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রেখে তা বাস্তবায়নে কমিশন গঠন করতে হবে। প্রিলিমিনারি থেকে কোটা শতভাগ বাস্তবায়ন করতে হবে। সেই সঙ্গে কোটা সংস্কারের আন্দোলনের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে যারা হামলায় জড়িত তাদের বিচার করতে হবে।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুজ্জামান শাহীন বলেন, কোটা নিয়ে আন্দোলনে চক্রান্তের মূলে ছিল জামায়াত-শিবির। তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মুক্তিযোদ্ধাদের মুখোমুখি দাঁড় করাতে চায়। তাদের অনেকে নিজেদের প্রকাশ্যে রাজাকার হিসেবে ঘোষণা পর্যন্ত দিয়েছিল। এই রাজাকারের সন্তানদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। এর পর থেকে এই রাজাকারের সন্তানরা যেখানে দাঁড়াবে, তাদের সেখানে প্রতিহত করা হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানরা আর সহ্য করবে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আ ক ম জামাল উদ্দিন বলেন, কোটা সিস্টেমে মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নারীদের অবদানে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হতে পেরেছে। নারীদের এগিয়ে নেওয়া এবং পিছিয়ে পড়াদের অগ্রসর করার জন্য জেলা কোটার ব্যবস্থা করেছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায়, তখন কোটা প্রথা বাতিল করার মতো সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নিতে পারি না।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads