রমজানে খাবারের মান নিশ্চিতকরণে ঢাবি উপাচার্যকে ছাত্রদলের স্মারকলিপি

ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৪:৩৮
-67bed2f0cf38e.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
পবিত্র মাহে রমজানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর ক্যান্টিনে খাবারের মান বৃদ্ধি, যথাযথ মূল্য নিশ্চিতে উপাচার্যকে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতৃবৃন্দ।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড.নিয়াজ আহমেদ খানের কাছে স্মারকলিপি হস্তান্তর করা হয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, আগামী সপ্তাহ হতে বিশ্বের সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের সব থেকে পবিত্র সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র মাহে রমজান শুরু হতে যাচ্ছে। পবিত্র মাহে রমজানের এই মাসের অর্ধেকেরও বেশি সময় ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের ক্লাস ও পরীক্ষা চলমান থাকবে। সকল আবাসিক হলে শিক্ষার্থীদের অবস্থান থাকবে। পবিত্র মাহে রমজানের এই মাসটিতে রোজাদার শিক্ষার্থীগণ সেহরি ও ইফতারে সঠিক পুষ্টিমানসম্পন্ন খাদ্য গ্রহণ না করলে তাঁদের পক্ষে সুষ্ঠুভাবে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে যায়। পবিত্র রমজানের এই স্পর্শকাতর দিনগুলোতে অপুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করলে নানাবিধ শারীরিক সমস্যা ও অসুস্থতার শিকার হন বহু শিক্ষার্থী।
কিন্তু পরিতাপের বিষয় এই যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অসীম সাহসী নেতৃত্বে ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার দীর্ঘ অপশাসনের অবসান ঘটলেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খাদ্য ও পুষ্টির নিরাপত্তার মত মৌলিক অধিকার আদায়ের বিষয়ে তখনকার মতন এখনো চরম অবহেলা দৃশ্যমান রয়েছে। আর এই অবহেলার বিষয়টি সবচেয়ে প্রকট হয়ে ফুটে ওঠে প্রতিবছর রমজান মাস চলাকালে, যখন কিনা রোজাদার শিক্ষার্থীদের পুষ্টিকর খাদ্যের চাহিদা থাকে সর্বোচ্চ। এই বিষয়টি নিয়ে বিগত বহু বছরের মতন এবারও শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম হতাশা বিদ্যমান রয়েছে, যার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে অনলাইনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসমূহে তাদের মতামত সহ বাস্তবিক জীবনের নানান আলাপচারিতায়।
উপরোক্ত কারণে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পবিত্র মাহে রমজানকে সামনে রেখে রোজাদার শিক্ষার্থীদের খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদাকে সুষ্ঠুভাবে পূরণ করার লক্ষ্যে নিম্নোক্ত দুইটি পদক্ষেপ অতিসত্বর গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি বলে অনুধাবন করছে :
- হলসমূহের ক্যান্টিনে খাদ্যের মান বৃদ্ধি এবং যথাযথ মূল্য নিশ্চিতে হলভিত্তিক প্রশাসনিক মনিটরিং সেল গঠন।
- প্রয়োজনানুসারে হল ক্যান্টিনসমূহের ভর্তুকি বৃদ্ধির জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ।
উল্লেখ্য, নেতৃবৃন্দ উপাচার্য মহোদয়ের কাছে দাবি দুইটি তুলে ধরলে তিনি সেগুলোর বাস্তবায়ন, বিশেষত মনিটরিং সেল গঠনের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সাথে কাজ করবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বাংলাদেশের খবরকে বলেন, পবিত্র মাহে রমজানে শিক্ষার্থীদের এই দুর্ভোগ নতুন কিছু নয়। কিন্তু বিগত সময়গুলোতে আবাসিক হলগুলোতে ছাত্রলীগের ত্রাসের রাজত্ব জারি থাকার কারণে ছাত্রদল কিংবা অন্য কোন সংগঠন কর্তৃকই কার্যকরীভাবে এই দাবিটি উত্থাপন করা সম্ভব ছিল না, করলেও ছাত্রলীগের দখলদারিত্ব বজায় রাখার স্বার্থে তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তা আমলে নিতে চাইতেন না।আশা রাখছি পরিবর্তিত সময়ের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের কল্যাণে আমাদের উত্থাপিত দাবিসমূহ বাস্তবায়নে আন্তরিক ভূমিকা রাখবেন।
তিনি বলেন, পরিবর্তিত এই সময়ে আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের কল্যাণে সব সময়ের মতন সামনের দিনেও এরকম আরো কাজ করে যেতে সর্বোচ্চ আন্তরিক থাকবো। শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকারসমূহ আদায়ের ব্যাপারে সর্বোচ্চ সচেষ্ট থাকবো।
উপাচার্য মহোদয়ের সাথে সাক্ষাৎকালে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. মাসুম বিল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. নাসির উদ্দিন শাওন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. শামিম আকতার শুভ এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নূর আলম ভূঁইয়া ইমন প্রমুখ।
এমএমআই/এমআই