ড্যাফোডিলে ‘জেন-জি প্রজন্মের চিন্তা-ভাবনা’ কারিকুলাম সিম্পোজিয়াম
মাল্টিমিডিয়া করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১:৪২
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ‘জেন-জি প্রজন্মের চিন্তা-ভাবনা’ শীর্ষক দিনব্যাপী কারিকুলাম সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সাভারের আশুলিয়ায় অবস্থিত ড্যাফোডিল স্মার্ট সিটিতে আয়োজিত এই সিম্পোজিয়ামটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা, মিডিয়া ও যোগাযোগ বিভাগ আয়োজন করেছে।
সিম্পোজিয়ামের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল জেন-জি প্রজন্মের চিন্তা-ভাবনা এবং তাদের সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে অবদান তুলে ধরা। সিম্পোজিয়ামের উদ্বোধনী অধিবেশনটি সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স হলে শুরু হয়।
অধিবেশনে স্বাগত বক্তব্যে সাংবাদিকতা, মিডিয়া ও যোগাযোগ বিভাগের প্রধান আফতাব হোসেন বলেন, “কারিকুলাম সিম্পোজিয়াম আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম, যেখানে তারা ইন্ডাস্ট্রির বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে সরাসরি শেখার সুযোগ পায় এবং তাদের কাজের উন্নতির জন্য প্রতিক্রিয়া গ্রহণ করতে পারে।”
এছাড়া উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মানবিক ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. লিজা সারমিন, আইন বিভাগের প্রধান ড. কুদরাত-ই-খুদা বাবু, স্টুডেন্ট পরামর্শক ও ভর্তি বিভাগের উপ-পরিচালক মো. সিদ্দিকুল আলম রেজা এবং সাংবাদিকতা, মিডিয়া ও যোগাযোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আব্দুল কাবিল খান।
অধ্যাপক ড. লিজা সারমিন উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, “সাংবাদিকতা, মিডিয়া ও যোগাযোগ বিভাগ যে প্রোগ্রামগুলো আয়োজন করে, তা অন্যান্যদের চেয়ে আলাদা। কারণ তারা প্রতিটি প্রোগ্রামে সৃজনশীলতা ও প্রতিভা তুলে ধরে, যা দেখে আমি সবসময় মুগ্ধ হই।”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকতা, মিডিয়া ও যোগাযোগ বিভাগের শিক্ষার্থীদের তৈরি নির্বাচিত ভিডিও প্রদর্শন করা হয়, যা ‘জেন-জি’ প্রজন্মের রাষ্ট্র এবং সমাজ গঠনে অবদান তুলে ধরে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট লাউঞ্জে সাজানো শিক্ষার্থীদের তৈরি ইনফোগ্রাফিক্স, খবর এবং ফিচার রিপোর্টগুলি পরিদর্শন করেন অতিথিরা।
দুপুরের পর সিম্পোজিয়ামের দ্বিতীয় পর্বে সাংবাদিকতা, মিডিয়া ও যোগাযোগ বিভাগের প্রধান আফতাব হোসেন এর সঞ্চালনায় “আউটকাম-ভিত্তিক শিক্ষা” শীর্ষক একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন ব্র্যাকের সহকারী-পরিচালক শরিফুল ইসলাম হাসান, যমুনা টেলিভিশনের সিনিয়র ব্রডকাস্ট সাংবাদিক সালাউদ্দিন আহমেদ রেজা এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) এর গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মালিহা তাবাসসুম। এ সময় আলোচকরা সবাই একাডেমীক এবং বাস্তবিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
পরে সাংবাদিকতা, মিডিয়া ও যোগাযোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আব্দুল কাবিল খান এর সঞ্চালনায় দুটি আলাদা অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম অধিবেশনটি ছিল “অনলাইন এবং মোবাইল সাংবাদিকতা” বিষয়ে, যেখানে আলোচক ছিলেন ঢাকা পোস্টের সম্পাদক মহি উদ্দিন সরকার। তিনি বলেন, ঢাকা পোস্টের সম্পাদক মহি উদ্দিন সরকার সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে সাংবাদিকতার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করেছেন।
তিনি বলেন, “দিন দিন সাংবাদিকতা একটি 'ওয়ানম্যান ব্যাজ' হয়ে উঠছে, যেখানে একজন সাংবাদিককে রিপোর্টিং থেকে শুরু করে এডিটিং পর্যন্ত সব কাজই এককভাবে করতে হবে। এর ফলে সাংবাদিকদের দক্ষতা এবং প্রস্তুতির প্রয়োজনীয়তা আরও বেড়ে যাচ্ছে। এজন্য নিজেকে সঠিকভাবে প্রস্তুত করাটাই এখন গুরুত্বপূর্ণ।”
দ্বিতীয় অধিবেশনে “ডিজিটাল নিউজ আউটলেটের জন্য রাজস্ব কৌশল” নিয়ে আলোচনা করেন দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার ব্যবসায়িক উন্নয়ন ব্যবস্থাপক মো. নুরুল হক। এ সময় তিনি বলেন, “সাংবাদিকদের সম্মান অপরিসীম, তবে সে সম্মান অর্জনের জন্য প্রয়োজন ধৈর্য, সততা এবং অঙ্গীকার।”
সমাপনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকতা, মিডিয়া ও যোগাযোগ বিভাগের ৪৭ ব্যাচের ‘অনলাইন সাংবাদিকতা’ এবং ৪৮ ব্যাচের ‘অনলাইন এবং মোবাইল সাংবাদিকতা’ কোর্সের নির্বাচিত ৮ জন শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হয়। এছাড়া সাংবাদিকতা, মিডিয়া ও যোগাযোগ বিভাগের নতুন লোগো উন্মোচন করা হয় এবং অতিথিদের উপহার প্রদান করা হয়। সিম্পোজিয়ামের সমাপ্তি ঘোষণা করেন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আব্দুল কাবিল খান।
দিনব্যাপী এই আয়োজনে সাংবাদিকতা, মিডিয়া ও যোগাযোগ বিভাগের প্রভাষক জাহিদুল ইসলাম জুবায়ের, ইহা অবাপ্তি, সাবহা বিনতে জাকির তুর্ণা, সাকিব মোহাম্মদ শাহাদাত ইলিয়াস, মেহেরাবুল হক রাফিসহ সাংবাদিকতা, মিডিয়া ও যোগাযোগ বিভাগের সকল শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
এটি ছিল সাংবাদিকতা বিভাগের দ্বিতীয় সিম্পোজিয়াম, যার বিষয়বস্তু ছিল ‘জেন-জি প্রজন্মের চিন্তা-ভাবনা’। এই সিম্পোজিয়ামের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের সৃজনশীল কাজগুলো ইন্ডাস্ট্রির অভিজ্ঞদের সামনে উপস্থাপন করার সুযোগ পায়, যা তাদের কাজ সম্পর্কে সঠিক ধারণা প্রদান করে এবং ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে সাহায্য করে।
পারভেজ মোশারফ/এমবি