কুবিতে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী দুই পক্ষের অবস্থান
কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২২:০১
৭ দফা দাবিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই পক্ষ। রোববার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
সমন্বিত গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা থেকে বের হওয়া, পোষ্য কোটা বাতিল, দ্রুত ছাত্রসংসদ চালুসহ সাত দাবিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই পক্ষ। বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে এক পক্ষ এবং প্রশাসনিক ভবনের সামনে আরেক পক্ষ পৃথকভাবে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। পরে দুপুরে নিজ দপ্তরে দুই পক্ষের সঙ্গেই কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. হায়দার আলী।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা থেকে বের হওয়া, পোষ্য কোটা বাতিল করা, দ্রুত ছাত্র সংসদ কার্যকর করা, ভর্তি আবেদন ফি যৌক্তিক পর্যায়ে রাখা, অল্প সময়ে ভর্তি কার্যক্রম শেষ করা, ভর্তি পরীক্ষা বিভাগীয় শহরগুলোয় নেওয়া এবং ডোপ টেস্টের মাধ্যমে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের আসন বণ্টন করা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, গত ১৫ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৩তম একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন্ন ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বের হয়ে স্বতন্ত্রভাবে নেবে।
তবে গত ৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ইঙ্গিত দেন, গুচ্ছ পদ্ধতিতেই ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা নেবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। এমন পরিস্থিতিতে শনিবার অবিলম্বে সমন্বিত গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতি ত্যাগ ও ভর্তিতে পোষ্য কোটা বাতিল ঘোষণার দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দাবি না মানলে প্রশাসনিক ভবন তালাবদ্ধ করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। তবে শেষ পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবন তালাবদ্ধ না করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বৈষম্যবিরোধীদের দুই পক্ষ।
এক পক্ষের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো. পাবেল রানা বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতি ও পোষ্য কোটা বাতিলের জন্য তারা কয়েক দিন আগে প্রশাসনকে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন। ২০২৪-এর অভ্যুত্থান ছিল মূলত কোটাপ্রথার বিরুদ্ধে। তারা ক্যাম্পাসে কোনো কোটা দেখতে চান না। সমন্বিত গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতি, পোষ্য কোটা বাতিলসহ তাদের যৌক্তিক দাবিগুলো প্রশাসনকে মেনে নিতে হবে।
অন্য পক্ষের কর্মসূচিতে থাকা শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আবির বলেন, ‘আমরা চাই, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর মতামতের ভিত্তিতে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছে থাকবে নাকি থাকবে না, সেটা পরিষ্কার করে বলতে হবে। আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো মানতে হবে।’
জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক মো. হায়দার আলী সন্ধ্যায় বলেন, শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি শেষে তাদের দাবিগুলো নিয়ে তাদের কাছে আসেন। তারা কেউই গুচ্ছে থাকতে চান না। একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে চারটি চিঠি পাঠিয়ে তাঁদের গুচ্ছে থাকতে বলেছে। এত চিঠি দেওয়ার পরও যদি তারা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অমান্য করে, তাহলে বিষয়টি অভদ্রতা হবে।
তিনি আরও বলেন, বিষয়টি তারা শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে বলেছেন। আর গত বছর ভর্তির সময় ৩৮টি পোষ্য কোটা রাখা হয়, সেখানে মাত্র একজন ভর্তি হয়েছেন। সবাই না চাইলে তারাও পোষ্য কোটা চান না। দুটি বিষয়ই একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটের সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সোহাইবুল ইসলাম সোহাগ/এমজে