Logo

ক্যাম্পাস

সাধারণ শিক্ষার্থীর উপর হামলার ঘটনায় নীরব জবি প্রশাসন

Icon

জবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫:২১

সাধারণ শিক্ষার্থীর উপর হামলার ঘটনায় নীরব জবি প্রশাসন

ছবি : বাংলাদেশের খবর

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আকাশ আলী, তামান্না তাবাসসুম ও আবুল বাসার ওপর হামলা করেছেন মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা। মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে ছিলেন ছাত্রদল কর্মী অনিক কুমার দাশ। অনিক কেন্দ্রীয় ছাত্রদলে সহসভাপতি কাজী জিয়া উদ্দিন বাসেতের একনিষ্ঠ কর্মী।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিচার চাইতে জবি প্রশাসনের কাছে গেলে সেখানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক ২০০৫ সালের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা পড়তে বলেছেন শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীরা দ্রুত বিচারের আশা দিয়ে এমন আচরণের সম্মুখীন হয়ে তারা ক্ষুব্ধ।

রসায়ন বিভাগের ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের তামান্না তাবাসসুম বলেন, ‘আকাশকে বাঁচাতে গিয়ে আমি নিজেও মারধরের শিকার হয়েছি। আমার হাতে ও নাকে ব্যথা নিয়ে আজকে শুধু বিচারের আশায় এখানে এসেছি। কিন্তু আমরা প্রক্টরের কাছে গিয়েছিলাম, তারা আমাদের কোনো সহযোগিতা করেনি। আমরা তাহলে কার কাছে যাব? আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আকরাম হোসেন বলেন, ‘গতকালের (বুধবার) ঘটনার পর আমরা প্রক্টরের কাছে যাওয়ার পর তিনি আমাদের বলে ২০০৫ সালের নীতিমালা পড়ার জন্য। এ বিষয়ে তারা কী পদক্ষেপ নেবে সেই ব্যাপারে তিনি আমাদের কিছু জানাতে পারেনি। তারা আমাদেরকে ডিপার্টমেন্টের শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। যদি এ ঘটনায় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেয় তাহলে তাহলে আমরা প্রশাসন ও যে দলের প্রশ্রয়ে এ ঘটনা ঘটেছে, তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন গড়ে তুলবে। সেই সাথে আমরা ক্লাস বর্জনের ডাক দেবো।’

রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের আব্দুল কাহহার জামিল বলেন, ‘গতকালের (বুধবার) ঘটনায় প্রক্টর স্যার আমাদের কোনো খোঁজ নেননি। রাত ১০টার পর একজন সহকারী প্রক্টরকে পাঠান। তিনি চিকিৎসার জন্য কিছু টাকা দেন। কিন্তু মেইন প্রক্টর স্যারের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি আমাদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। গত এক বছরে আামদের বিভাগের শিক্ষার্থীরা তিনটি হামলার অভিযোগ করলেও সুষ্ঠু বিচার পায়নি। যদি ওই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হতো, তাহলে আজকে আমাদের এখানে দাঁড়াতে হতো না। আমরা এই ঘটনার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিচারের নামে টালবাহানা করা হয়। আমাদের প্রক্টর অফিস থেকে ভয় দেখিয়ে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। এ ছাড়া আমাদের নানারকম হুমকির ভয় দেখনো হয়। বলা হয়, যদি ক্যাম্পাসের বাইরে কেউ হামলা করে তাহলে সে দায় প্রক্টর অফিস নেবে না।’

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, ‘সবকিছুর জন্য সময় দরকার। রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা যেভাবে বিচার চাচ্ছে, সেটা এত দ্রুত সম্ভব না। আগের একটা কমিটি আছে, সে কমিটির কাছেই আমি এটার তদন্ত হস্তান্তর করেছি। হ্যাঁ, আমি তাদের ২০০৫ সালের নীতিমালা পড়তে বলেছি। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামীকাল ভর্তি পরীক্ষা আছে,সবমিলিয়ে ব্যস্ততার মধ্যে আছি।’

প্রসঙ্গত, বুধবার (২৯ জানুয়ারি) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মার্কেটিং বিভাগের দুই শিক্ষার্থী জুতা পায়ে উঠলে রসায়ন বিভাগের দুই শিক্ষার্থী তার প্রতিবাদ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে মার্কেটিং বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী। হামলার নেতৃত্ব দেন ছাত্রদলকর্মী মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অনিক কুমার দাশ।

জেএন/এমজে

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর