Logo

ক্যাম্পাস

অযত্ন-অবহেলায় নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার

Icon

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:১৪

অযত্ন-অবহেলায় নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার

ছবি : বাংলাদেশের খবর

ফেব্রুয়ারি এলেই সারাদেশে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনারগুলো সাজানো হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংগঠন ভাষা শহীদদের স্মরণে আয়োজন করে নানা কর্মসূচি। কিন্তু জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। বছরের পর বছর এটি অবহেলায় পড়ে থাকলেও সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

পুরাতন কলা ভবনের পাশে চুরুলিয়া মঞ্চের ঝোঁপের পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা শহীদ মিনারটি এখন যেন স্মৃতিচিহ্ন মাত্র। ২০১০ সালে তৎকালীন উপাচার্য সৈয়দ গিয়াসউদ্দিন আহমেদের উদ্যোগে এটি পুনর্নির্মাণ করা হলেও এরপর ১৪ বছরে কোনো সংস্কার হয়নি। অথচ এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণে কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। কিন্তু শহীদ মিনারের জন্য কোনো বাজেট বরাদ্দ করা হয়নি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শহীদ মিনারের চারপাশে ধুলো-ময়লা আর শুকনো পাতার স্তূপ জমে আছে। লোহার কাঠামোয় মরিচা ধরেছে, মিনারের গায়ে জমেছে শেওলার আস্তরণ। দীর্ঘদিন রঙ না করায় সৌন্দর্য হারিয়ে গেছে। নেই কোনো সীমানাপ্রাচীর বা নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ফলে দর্শনার্থীরা অনায়াসে জুতা পায়ে বেদীতে উঠে পড়ছেন।

শুধু তাই নয়, শহীদ মিনারের সামনেই পড়ে থাকতে দেখা গেছে বারবিকিউ পার্টির ইট-কয়লার অবশিষ্টাংশ। দেখে মনে হবে, এটি যেন এক পরিত্যক্ত স্থান। ভাষার মাসেও শহীদ মিনারের এমন বেহাল দশায় হতাশ শিক্ষার্থীরা।

এক কোণে পড়ে থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীই জানেন না যে ক্যাম্পাসে একটি শহীদ মিনার রয়েছে। বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ অনিক বলেন, ‘শহীদ মিনার কেবল ২১ ফেব্রুয়ারির জন্য একদিন ব্যবহার করা হয়, বাকি সময় অবহেলায় পড়ে থাকে। অথচ এটি আমাদের ইতিহাস ও আত্মত্যাগের প্রতীক।’

মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আল মামুন বলেন, ‘শহীদ মিনার শুধু ফেব্রুয়ারিতে নয়, সারা বছর সংরক্ষণ করা উচিত। আমাদের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন যদি অবহেলায় নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে নতুন প্রজন্ম কীভাবে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব বুঝবে?’

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, শহীদ মিনার সংস্কারের জন্য কোনো বাজেট নেই। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য অবকাঠামো উন্নয়নে বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের দাবি, প্রশাসন পরিকল্পিতভাবে শহীদ মিনারকে অবহেলা করছে। অথচ অন্যান্য স্থাপনার জন্য বিশাল বাজেট বরাদ্দ থাকলেও ভাষা আন্দোলনের এই প্রতীকের সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। দ্রুত শহীদ মিনারটির সংস্কার ও নিয়মিত পরিচর্যা নিশ্চিত করতে হবে। কর্তৃপক্ষ চাইলে অল্প সময়ের মধ্যেই যথাযথ সংস্কারের মাধ্যমে একে নতুন রূপ দেওয়া সম্ভব। 

মো. সাইফুল ইসলাম/এটিআর

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর