Logo

ক্যাম্পাস

সুনীতি শান্তি হলের এই রুমটি যেন মাদকের আস্তানা

Icon

কুবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯:৩৮

সুনীতি শান্তি হলের এই রুমটি যেন মাদকের আস্তানা

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) নারী শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল সুনীতি শান্তি হলের ২১৪ নম্বর রুমে নিয়মিত মাদকের আসর বসে বলে অভিযোগ উঠেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে হলের প্রভোস্ট বরাবর বারবার মৌখিক অভিযোগ দিয়েও কোনো সুরাহা না পেয়ে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) লিখিত অভিযোগ দিয়েছে হলের শিক্ষার্থীরা। 

ওই অভিযোগপত্রে তারা বলেছেন, আমরা সুনীতি শান্তি হলের সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে গভীর উদ্বেগের সাথে জানাচ্ছি যে, দীর্ঘদিন যাবত হলে কিছু শিক্ষার্থী ২১৪নং রুম দখল করে সেখানে মাদক সেবন করছে। মাদকসেবিদের পরিচয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে– ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ও সুনীতি শান্তি হলের ২১৪ নম্বর রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী রাবিনা ঐশি, একই বিভাগ ও শিক্ষাবর্ষের এবং ২১৩ নম্বর রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী লাবিবা ইসলাম, একই শিক্ষাবর্ষের ফার্মেসি বিভাগের ৩২৩ নম্বর রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী আতিফা লিয়া এবং একই শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের ২১৭ নম্বর রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী মাইশা রহমান রোদিতার নাম। 

অভিযোগপত্রে ওই রুমে (২১৪ নম্বর রুম) কারো সিট বরাদ্দ হলে হুমকি দিয়ে বের করে দেওয়া এভং হলের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সাথে উগ্র আচরণ করার অভিযোগও উল্লেখ করা হয়েছে। 

লিখিত অভিযোগে আবাসিক শিক্ষার্থীরা মাদকাসক্ত শিক্ষার্থীদের হল থেকে বহিষ্কার, জড়িতদের ডোপ টেস্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ, হলের নিরাপত্তা জোরদার ও বহিরাগত প্রবেশে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং মাদক ও অপরাধ প্রতিরোধে শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে ক্যাম্পেইন এবং কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়েছে। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের সুনীতি শান্তি হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সাদিয়া ফেরদৌস বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত দেখছি ২১৪ নম্বর রুমে মাদকের আসর বসে। এর আগেও কয়েকবার প্রভোস্ট ম্যামকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। আজকে হলের শিক্ষার্থীরা মিলে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, ২১৪ নম্বর রুমে প্রতিনিয়ত মাদকের আসর বসে। গতকালও বসেছে। গন্ধে সারা হলে টেকা যায় না। আমরা অতিষ্ঠ। হল প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি দ্রুত এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

এ বিষয়ে অভিযুক্তদের মধ্যে আতিফা লিয়া বলেন, আমি তো ২১৪ নম্বর রুমে থাকি না। আমার রুম নম্বর ৩২৩৷ ওই রুমে আমার ফ্রেন্ড থাকে। মাঝেমধ্যে যাওয়া হয়। ওদের কাছে অ্যাভিডেন্স কী যে আমি এগুলো করেছি বা করি? যা অভিযোগ আনা হয়েছে, তা হল প্রশাসন দেখবেন। দরকার হলে আমি রুম খুলে দেব। হল প্রশাসন বরাবর অভিযোগ করা হয়েছে, হল প্রশাসন দেখবে। এখানে আমার কিছু বলার নাই।

মাইশা রহমান রোদিতা বলেন, ওই রুমে আমার ফ্রেন্ড থাকে। এ ছাড়া আমার ফ্রেন্ডের সাথে ঝামেলা হওয়ার কারণে কয়েকদিন আমি যাইনি। গতকাল তার বার্থডে থাকায় গিয়েছিলাম। কিন্তু এমন কিছু তো হয়নি।

লাবিবা ইসলাম বলেন, যে অভিযোগটি দেওয়া হয়েছে সেই পরিপ্রেক্ষিতে বলবো কারো কাছে কোনো প্রমাণ আছে? কেউ দেখেছে? আমাকে শুধু শুধু হ্যারাসমেন্ট করা হচ্ছে। আমি আগে ছাত্রলীগ করতাম। বিবেকের তাড়নায় আমি আন্দোলনও করেছি। এখন আমার পড়াশোনার শেষ দিকে এসে হ্যারাসমেন্ট এবং হল থেকে বের করার জন্য এই অভিযোগ সাজানো হয়েছে।

এ ছাড়া রাবিনা ঐশিকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল দিয়েও পাওয়া যায়নি। 

এ বিষয়ে হলের প্রভোস্ট ড. মোছা: শাহিনুর বেগম বলেন, আজ বিকেলে হল প্রশাসনের সবাই বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ফাইনাল সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

রিফাত/বিএইচ

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর