Logo

সারাদেশ

মুন্সীগঞ্জে শিল্পকলা একাডেমির বেহাল দশা

Icon

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫৭

মুন্সীগঞ্জে শিল্পকলা একাডেমির বেহাল দশা

মুন্সীগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমির বেহাল দশা নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে জেলার সংস্কৃতিকর্মীরা। ভাঙাচোরা মঞ্চ, বিকল ফ্যান-জেনারেটর, নষ্ট সাউন্ড সিস্টেম, ব্যবহারের অনুপযোগী টয়লেট, পুরোনো ও ছেঁড়া ব্যাক স্ক্রিন—সবমিলিয়ে পুরো একাডেমিটিই এখন সংস্কৃতি চর্চার পথের সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বছরের পর বছর ধরে এসব সমস্যা থাকলেও সমাধানে নেই কোনো কার্যকর উদ্যোগ। ফলে একাডেমির মূল অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠান আয়োজন করতে হলে বিভিন্ন নাট্যদল ও সংগঠনগুলোকে বাইরে থেকে ভাড়া করতে হচ্ছে লাইট, সাউন্ড, ফ্যান ও পর্দা। এতে বাড়তি অর্থ ব্যয় যেমন হচ্ছে, তেমনি তৈরি হচ্ছে ভোগান্তিও।

মুন্সীগঞ্জের বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অভিজিৎ দাস ববি বলেন, এ জেলার শিল্পীরা ঢাকাসহ আন্তর্জাতিক পর্যায়েও খ্যাতি অর্জন করেছে। অথচ জেলার প্রধান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটির করুণ অবস্থা নতুন শিল্পী তৈরির ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। চেয়ার, ব্যাক স্ক্রিন, ফ্যান—সবই ভাঙা। এই মঞ্চে নাটক মঞ্চায়ন করা দুঃসাহসিক কাজ।

মুন্সীগঞ্জ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ঢালী বলেন, একাডেমিটি এখন কেবল একটি ভবনের নাম। সামান্য বৃষ্টিতেই ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে। এ ছাড়া টয়লেটগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী, পারটেক্স ও চেয়ার ভাঙা, ফ্যান অচল। নাট্যদলগুলোকেও বাইরে থেকে সব কিছু ভাড়া করতে হয়। 

তিনি আরও বলেন, চারভাগের একভাগ চেয়ারে অনুষ্ঠান চলে। পুরো পরিবেশটাই অনুৎসাহজনক।

একাডেমিতে নেই নিজস্ব সাউন্ড সিস্টেম। অনুষ্ঠান চলাকালে বিদ্যুৎ চলে গেলে জেনারেটরের দরকার পড়ে, কিন্তু সেটিও গত ১০ বছর ধরে বিকল। সংস্কারের জন্য অল্প অর্থই যথেষ্ট হলেও কেউ উদ্যোগ নিচ্ছে না।  

ব্যাক স্ক্রিনের সাদা কাপড়টিও ছেঁড়া ও বিবর্ণ। একজন নাট্যকর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এটা দেখতে একেবারে বাজে লাগে। দ্রুত এটি পরিবর্তন করা উচিত।

জেলা শিল্পকলা একাডেমির দায়িত্বপ্রাপ্ত কালচারাল অফিসার মো. এরশাদ হাসান বলেন, লোকবল সংকট ভয়াবহ। কোনো পরিচ্ছন্নতাকর্মী নেই, বাইরে থেকে ভাড়া করতে হয়। আমি মাত্র দুই মাস আগে যোগ দিয়েছি। ইতোমধ্যে গণপূর্ত বিভাগে প্রস্তাব পাঠিয়েছি এবং তা দ্রুতই উপদেষ্টার কাছে উপস্থাপন করব।

সাংস্কৃতিক কর্মীদের মতে, এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য প্রশাসন, শিল্পী, প্রশিক্ষক ও সংস্কৃতি বিভাগের সম্মিলিত উদ্যোগ জরুরি। দীর্ঘদিন ধরে কমিটি না থাকাটাও একটি বড় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তাদের দাবি, দ্রুত নির্বাচিত কমিটি গঠন করে সংস্কৃতি চর্চার উপযোগী পরিবেশ গড়ে তোলা হোক।

  • আবু সাইদ/এটিআর
Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর