দেশের সবচেয়ে জনবহুল থানার সম্বল ২টি গাড়ি, ভরসা লেগুনা-অটো
আশুলিয়া (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৬
আশুলিয়া থানা /ছবি : বাংলাদেশের খবর
দেশের অন্যতম জনবহুল শিল্পাঞ্চল এলাকা আশুলিয়া থানার যানবাহন সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। মাত্র দুটি গাড়িতে চলছে এই থানার কার্যক্রম। তার মধ্যে একটির অবস্থা জরাজীর্ণ। বাহন সংকটে ব্যাহত হচ্ছে পুলিশের স্বাভাবিক কার্যক্রম। বাধ্য হয়ে লেগুনা, অটোরিকশা কিংবা মোটরসাইকেলে করে দায়িত্ব পালন করছেন এই থানার পুলিশ সদস্যরা।
ঢাকার সাভার উপজেলার একটি থানা আশুলিয়া। ১৪৮ বর্গ কিলোমিটারের বেশি আয়তন ও ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই থানায় প্রায় ৩০ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। যাদের অধিকাংশই পোশাক শ্রমিক।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ কাজের সন্ধানে এসে বসবাস করেন এই শিল্পাঞ্চলে। তাই স্বাভাবিকভাবেই এখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পুলিশের কার্যক্রমও অনেক বেশি। অথচ পুলিশের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় গাড়ি সংকটেই পড়েছে আশুলিয়া থানা পুলিশ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আশুলিয়ার বাইপাইল মোড় ও থানা এলাকায় পুলিশের সাথে ছাত্র-জনতার ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ছাত্র-জনতার অনেকে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত ও নিহত হন। পরে ছাত্র-জনতা ক্ষুব্ধ হয়ে আশুলিয়া থানার ভেতরে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। থানা ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে থানায় থাকা সকল গাড়িসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও সরঞ্জাম পুড়ে যায়।
আন্দোলনের পর থানার কার্যক্রম পুনরায় শুরু হলেও যানবাহন সংকটের কারণে স্বাভাবিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে। তাই থানার কার্যক্রম চালিয়ে নিতে পুলিশের ভরসা এখন রিকুইজিশন গাড়ি।
আশুলিয়া থানা পুলিশের দীর্ঘদিনের যানবাহন সংকট জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর আরও ব্যাপক হারে বেড়ে যায়। বর্তমানে যেসব গাড়ি আছে তার অধিকাংশই পুরানো মডেলের গাড়ি। এই অবস্থায় সংকট মোকাবিলায় ব্যক্তি মালিকানাধীন মাহিন্দ্রা, লেগুনা বা গাড়ি রিকুইজিশন করে পুলিশি দায়িত্ব পালন করা হচ্ছে। কেউ কেউ ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়েই ডিউটি পালন করছেন। অনেকে আবার ভাড়া গাড়িও ব্যবহার করেন।
আশুলিয়া থানার একাধিক উপ-পরিদর্শক (এসআই) এর সাথে কথা বলে জানা যায়, আশুলিয়া থানায় বর্তমানে দুটি গাড়ি রয়েছে। যার একটি থানার পরিদর্শক (ওসি) ব্যবহার করেন এবং অন্যটি ব্যবহার করেন থানার কলো ডিউটি অফিসার। সুতরাং দেশের সবচেয়ে জনবহুল থানা এলাকায় যেকোনো জরুরি মুহূর্তে পুলিশকে ভরসা করতে হয় রিকুইজিশন গাড়ির ওপর।
থানার যে গাড়িটি ডিউটি অফিসার ব্যবহার করেন, সেটির অবস্থাও ভঙ্গুর বলে জানায় আশুলিয়া থানা পুলিশ। তাই তাদের দাবি থানার কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে জরুরি ভিত্তিতে থানায় গাড়ির সংখ্যা বাড়াতে হবে।
গাড়ি সংকটের বিষয়ে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘সাভার-আশুলিয়াতে প্রায় ৭০ লাখ মানুষের বসবাস। আশুলিয়াতে প্রায় ৪০-৪৫ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। আশুলিয়ার রাস্তাঘাটের যে অবস্থা তাতে যেকোনো জায়গায় যেতে হলে আমাদের অনেক সময় লাগে। এর মধ্যে থানায় গাড়ি হচ্ছে দুইটি। একটির অবস্থা জরাজীর্ণ। তাই এখন আমাদের ভরসা লেগুনা। লেগুনা, অটো বা মোটরসাইকেল ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই।’
গাড়ির জন্য আবেদন করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গাড়ির জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেছি। আমাদেরকে কিছু গাড়ি দেওয়া হবে। তবে একটু সময় লাগতে পারে।’
এসবি/ওএফ