হাসিনা যদি একজন প্যাথলজিক্যাল খুনি না হতো, তাহলে সে ২ হাজার তাজা প্রাণ কেড়ে নিতে পারতো না। একটা জীবনের প্রতিও যদি তার মায়া থাকতো, সে এতগুলো জীবন ঝরাতে পারতো না। এমনকি হাসপাতালেও পুলিশ ও আওয়ামী ক্যাডাররা গুলি চালিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম।
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানে নিহত চট্টগ্রাম বিভাগের ১০৫ জনের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান উপলক্ষে শনিবার (৭ ডিসেম্বর) নগরীর প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বিভাগের ১০৫ শহীদ পরিবারের হাতে ৫ লাখ টাকার একটি করে চেক তুলে দেয়া হয়।
তিনি বলেছেন, খুনিরা নতুন করে ফিরে আসার ষড়যন্ত্র করছে। যারা শেখ হাসিনাসহ খুনিদের পুনর্বাসন করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে আবার রাজপথে নামতে ও জীবন দিতে প্রস্তুত আছি।
তিনি বলেন, নতুন এই বাংলাদেশে কিছু পুলিশ সদস্য আবার একটি দলের হয়ে কাজ করছে। দয়া করে ওই পোশাকটা খুলে রেখে চলে যান। আমরা জীবন দিতে শিখে গেছি, এই দেশে কোনো দালাল ও তোষামোদকারীর আর জায়গা হবে না। শহীদ ভাইদের নিয়ে এখনো মামলা ব্যবসা হচ্ছে। আমরা এগুলো দেখতে চাই না।
সারজিস বলেন, এখনো যারা এই আন্দোলনের বিপক্ষে সাফাই গায় তারা শেখ হাসিনার রেখে যাওয়া কীট। এসব কীটের যদি আবার পাখা গজায় আজ থেকে ৫ বছর পর তারা শহীদ পরিবারের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়বে। তাই খুনিরা যেন কোনোভাবেই পুনর্বাসনের সুযোগ না পায় সে জন্য সচেতন থাকতে হবে। তিনি শেখ হাসিনার ফাঁসি ও তার দোসর খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
শহীদ পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে সারজিস বলেন, আমরা যত সান্ত্বনাই আপনাদের দিই, আর্থিক সহযোগিতা করি, একজন সন্তানের অভাব, একজন জীবনসঙ্গীর অভাব, একজন ভাইয়ের অভাব কোনোদিন পূরণ করতে পারব না।
এর আগে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন সারজিস আলম, মীর মাহাবুবুর রহমান স্নিগ্ধসহ কয়েকজন সমন্বয়ক। তারা শহীদ পরিবারের পাশে সবসময় থাকার অঙ্গীকার করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীন, পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন খান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আব্দুল কাদের, রাসেল আহমেদ, খান তালাত মাহমুদ রাফি ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সদস্য তাসনিম জারা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) অং সুই প্রু মারমা, চট্টগ্রাম রেঞ্জের এডিশনাল ডিআইজি সঞ্জয় সরকার ও জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম।
ওএফ