খানজাহান আলী (রহ.) মাজারে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী বাৎসরিক উরস মোবারক। সৃষ্টিকর্তার প্রতি আরাধনা ও আধ্যাত্মিক শান্তি খুঁজতে সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ভোর থেকে ভক্তের উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে ওঠে মাজার এলাকা।
ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে হাজারো মানুষের সমাগম হলেও মুসলিম সম্প্রদায়ের দর্শনার্থীদের সংখ্যা বেশি। দুই দিনব্যাপী এই উরসে ভক্তরা জিকির, দোয়া ও আধ্যাত্মিক গান করেন।
খুলনা থেকে আসা দশেমার্থী মোল্লা সাব্বিরুল ইসলাম রাফি বলেন, ‘খানজাহান আলীর মাজারে এসে শান্তি পাই। এখানে নিয়মিত উরসে অংশ নিই।’
স্থানীয় আজিম ফকির বলেন, ‘মাজারের পরিবেশ অনেক সুন্দর। আর উরস উপলক্ষে জায়গাটি আরও সুন্দরভাবে সাজানো হয়। এটি দেখার জন্যই এখানে আসি। খানজাহান আলীর মাজারে এসে মনে একটা বিশেষ শান্তি পাই। উরসের সময় ভক্তদের এমন আগ্রহ দেখে ভীষণ ভালো লাগে।’
দর্শনার্থী আলিমুজ্জামান বলেন, ‘প্রতিবছর বন্ধুবান্ধব নিয়ে এখানে আসি। এই পরিবেশে এসে খুব ভালো লাগে।’
মাজারের প্রধান খাদেম ফকির তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘সাড়ে ৫০০ বছরের পুরনো ঐতিহ্যকে ধারণ করে মাজারে শুরু হয়েছে বার্ষিক উরস শরীফ। আধ্যাত্মিকতার এই মহাযজ্ঞে প্রতি বছরই দেশ-বিদেশ থেকে হাজারো ভক্ত সমবেত হন। এটি শুধু একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং ভক্তদের জন্য এটি আধ্যাত্মিক মিলনের বিশাল আয়োজন। এবারের আয়োজন আগের চেয়ে আরও বড় ও জাঁকজমকপূর্ণ হতে যাচ্ছে।’
মাজার প্রাঙ্গণ ইতোমধ্যেই উৎসবের রঙে সেজে উঠেছে। নানা আয়োজন, পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত, মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে চলছে এ উরস। ভক্তদের জন্য রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সেবাকেন্দ্র। শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকদের সক্রিয় উপস্থিতি রয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে এ ঐতিহাসিক উরস শরীফের সমাপ্তি হবে। তবে সমাপ্তির আগে দুই দিনব্যাপী চলবে নানা আনুষ্ঠানিকতা। রাতভর জিকির, দোয়া ও বিশেষ আয়োজনে ভক্তদের উপস্থিতি পুরো এলাকা উৎসবমুখর করে তুলেছে।
খাদেম জানান, এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় ভক্তদের উপস্থিতি আরও বেশি। আধ্যাত্মিক এই মিলনমেলায় ভক্তদের উপস্থিতি ও আন্তরিকতায় মাজার প্রাঙ্গণ পরিণত হয়েছে অনন্য পরিবেশে। এই ঐতিহ্য হাজারো মানুষের হৃদয়ে ছাপ রেখে যায় এবং সবার মাঝে একতা ও সম্প্রীতির বার্তা পৌঁছে দেয়।
এমজে