নেত্রকোণায় পরিবারসহ কাশেমের একঘরে জীবন
মাল্টিমিডিয়া করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৯
ছবি : প্রতিনিধি
নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় ‘চোর’ আখ্যা দিয়ে একটি পরিবারকে দেড় বছর ধরে একঘরে করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় মাতবরদের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, উপজেলার মাসকা ইউনিয়নের মো. আবুল কাশেম মামার বাড়ি ছবিলা গ্রামে বসবাস করতেন। প্রায় দেড় বছর আগে ভরাপাড়া বাজার এলাকায় অটো সহ শাহজাহান মিয়া নামের এক চোরকে আটক করেন স্থানীয়রা। উপস্থিত জনতার চাপে ওই চোর বলেন, ‘ছবিলা গ্রামের আবুল কাশেমও তার সহযোগী।’
পরবর্তীতে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে আবুল কাশেমের ছেলেকে জনসম্মুখে বেঁধে পেটানোর ঘটনাও ঘটে। তখন থেকেই আবুল কাশেমের পরিবারকে একঘরে করে রাখার ঘোষণা দেন স্থানীয় মাতবররা।
সেই থেকেই আবুল কাশেম নিজের পরিবার, ঘরবাড়ি ছেড়ে অটো রিকশা চুরির অপবাদ নিয়ে প্রাণনাশের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
আবুল কাশেমের স্ত্রী নুরন্নাহার বলেন, ‘আমার স্বামীর বিরুদ্ধে অটো চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ফজলু মিয়া ও অন্তু মিয়া গ্রামবাসীকে ভুলভাল বুঝিয়ে উসকানি দিয়ে আমাদের একঘরে করে রেখেছে। এখন আমি খুবই আতঙ্কের মধ্য আছি। গ্রামের কোনো মানুষ আমাদের সাথে কথা বলে না খাবার পানি আনতে দেয় না, গোসল করতে দেয় না, দোকান থেকে প্রয়োজনীয় কোনো কিছু আনতে দেয় না।’
নুরন্নাহার আরও বলেন, ‘চলতি বোরো মৌসুমের বীজতলার বীজগুলো মই দিয়ে ইদ্রিস মিয়া নষ্ট করে। এতো অন্যায়-অত্যাচার আর সহ্য করতে পারছি না, বেঁচে থেকেও মরে যাচ্ছি।’
স্থানীয় বাসিন্দা ইদ্রিস মিয়া বলেন, ‘আবুল কাশেম অত্যন্ত খারাপ প্রকৃতির মানুষ, চুরি তার পেশা। চুরির কারণেই গ্রামবাসী সালিশ দরবার করে তাদেরকে একঘরে করেছে। আর বীজতলার জায়গার মালিক হোসেন মিয়া আমার থেকে টাকা নিয়ে জায়গাটা দিয়েছে আবুল কাশেমের ছেলে বীজধান রোপণ করেছিল তাদের বীজতলায় মই দিয়ে নতুন করে আমি বীজধান রোপণ করেছি। ’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন বলেন, ‘আবুল কাশেম একজন পেশাদার চোর, তার নামে থানায় বিভিন্ন সময়ে মামলা হয়েছে। আবুল কাশেমের কর্মকাণ্ডের কারণে আমরা অন্য এলাকায় লজ্জায় মুখ দেখাতে পারি না।’
এমআই