ছবি : প্রতিনিধি
মানিকগঞ্জের একটি ইউনিয়ন পরিষদের সচিব পদে চাকরি করেন সুরভি দত্ত। তবে তার পরিবর্তে ভাই মানস রঞ্জন দত্ত চাকরি করছেন। তিনি প্রায় ৭ বছর ধরে বোনের পরিবর্তে অফিস করছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জাতীয় দিবস, বিভিন্ন সভা ও ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তা পরিষদ পরিদর্শনে এলে সেদিন অফিসে আসেন বোন সুরভি দত্ত। বোনের হয়ে বিভিন্ন সনদ ও পরিষদের কাগজপত্রে স্বাক্ষরও করেন ভাই মানস রঞ্জন দত্ত (স্বপন দত্ত)। ঠিক এমনটাই হয়ে আসছে মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদে।
অথচ, তার ভাই মানস রঞ্জন দত্ত (স্বপন দত্ত) সচিব হিসেবে নিয়মিত অফিস করেন। পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ সকল ধরনের কাজ করেছে। এমনকি ইউনিয়ন পরিষদের কর্মচারীদের হাজিরা খাতাতেও সাক্ষর করাতেও দেখা যায়।
গত ৫, ৮ ও ৯ ডিসেম্বর তারিখ দুপুর ১ টা পর্যন্ত গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিবের কক্ষে সুরভি দত্তের পরিবর্তে তার ভাই মানস রঞ্জন দত্তকে সচিবের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ইউপি সদস্য বলেন, ‘আমাদের সচিব সুরভি দত্ত হলেও অফিস করেন তার বড় ভাই মানস রঞ্জন দত্ত। মাঝেমধ্যে সুরভি দত্ত অফিসে আসেন। উপজেলা থেকে কর্মকর্তারা আসলে ওই দিন সুরভি অফিসে আসেন। তাছাড়া সব সময় মানস রঞ্জন দত্তই সচিবের কাজ করেন।’
গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ডেগিরচর এলাকার সোবহান মোল্লা জানান, ‘চাকরি তার বোনের হলেও মানস রঞ্জন দত্ত দাদাকেই বেশি পাওয়া যায়। দাদা যখন চাপে পরে তখন দিদি আসে। আমি যতবার পরিষদে গিয়েছি দাদাকেই পেয়েছি।’
গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ভুট্টো বলেন, ‘আমরা ইউনিয়ন পরিষদে কোনো কাজে গেলে রঞ্জন দত্তের কাছেই যাই। তাকে সব সময় অফিসে পাওয়া যায়।’
এ বিষয়ে সচিবের বড় ভাই মানস রঞ্জন দত্ত (স্বপন দত্ত) বলেন, ‘চেয়ারম্যান আমাকে তার উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। সচিব সুরভি দত্ত আমার ছোট বোন। চেয়ারম্যান বলেছে তাকে সহযোগিতা করতে। তাই আমার বোনকে সাহায্য করি।’
গোপীনাথপুর ইউনিয়নের সচিব সুরভি দত্ত বলেন, ‘আমার কাজ অনেক বেশি তাই চেয়ারম্যান আমার দাদাকে সহযোগী হিসেবে কাজ করার জন্য বলেছেন। চেয়ারম্যান আমার দাদাকে তার উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। আমি সব সময় অফিসে আসি। শুধু বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) কালী মন্দিরে গিয়েছিলাম।’
গোপীনাথপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিন মোল্লা বলেন, ‘আমি তাকে আমার উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছি। আমার ইউনিয়ন সব সময় কাজের মানের দিক দিয়ে প্রথম হয়। সচিবের কাজ অনেক বেশি তাই সচিবের সহকারী হিসেবে কাজ করছেন তিনি।’
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক (উপসচিব) সানজিদা জেসমিন বলেন, ‘আপনার কাছ থেকে বিষয়টা জানতে পারলাম, আমি এই বিষয়ে তদন্ত করব। যদি ঘটনাটি সত্যি হয়ে থাকে, তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আফ্রিদি আহাম্মেদ/এমআই