দাফনের ৩ মাস পর কবর থেকে স্কুলছাত্রের মরদেহ উত্তোলন
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪:৫২
ঝিনাইদহে দাফনের তিন মাস পর আদালতের নির্দেশে সোহান ইসলাম (১৪) নামে এক স্কুলছাত্রের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে সদর উপজেলার নগরবাথান গ্রামের একটি কবরস্থানে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মেফতাহুল হাসানের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশ মরদেহ উত্তোলন করে।
সোহান ইসলাম ওই গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে।
এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় রহস্যজনক মৃত্যু হয় স্কুলছাত্র সোহানের। পরে ২১ সেপ্টেম্বর ময়নাতদন্ত ছাড়াই তড়িঘড়ি করে তার লাশ ঝিনাইদহের নগরবাথান গ্রামে দাফন করে একটি মহল।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, কিশোর সোহানের লাশ দাফনের পর তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রচার হলে ঝিনাইদহের একটি আদালতে ৮ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন তার বাবা শহিদুল ইসলাম। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শরীফ লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য আবেদন করলে ঝিনাইদহ সদর আমলি আদালতের বিচারক তা মঞ্জুর করেন।
মামলার বাদী শহিদুল ইসলাম জানান, চলতি বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর সাকিব ও তার অজ্ঞাত বন্ধুরা সোহানকে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ঢাকার ৩'শ ফিটের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পর দিন বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে শহিদুল ইসলাম ছেলেকে বাড়িতে ফেরার জন্য ফোন করলে সোহান জানায়, সে খুব ঝামেলায় আছে। এরপর সোহানের বাবা সাকিবকে ফোন করেন। এসময় ফোন ধরে সাকিব গালিগালাজ করে মোটা অংকের টাকা দাবি করে। এই ঘটনার কিছুক্ষণ পর রাজধানী ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে সোহানের বাবাকে ফোন করে জানানো হয় সোহান হাসপাতালে। খবর পেয়ে তিনি হাসপাতালে গিয়ে দেখতে পান সাকিবের দুই ফুফু ডায়রি খাতুন ও আরজিনা খাতুন সেখানে উপস্থিত।
সোহানের বাবা আরও অভিযোগ করেন, হাসপাতালে থাকতেই সাকিবের বাবা আব্দুল আজিজ তাকে ফোন করে কোনো ঝামেলা না করার জন্য হুমকি দেন। এছাড়া সাকিবের ফুফা আরব আলী তাকে শিখিয়ে দেন, পুলিশকে আমি যেন বলি সোহান দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।
সোহানের মা সুন্দরী খাতুন অভিযোগ করেন, তার ছেলেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে নগরবাথান গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে সাকিব (২৭)। জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। আমি এর বিচার চাই।
এদিকে স্থানীয়রা বলছেন, আসামি সাকিবের ফুফু ডায়রি খাতুন ও আরজিনা ঢাকায় মানুষের দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রির ব্যবসা করে। এই অপকর্ম করে তারা ইতিমধ্যে ঢাকা ও ঝিনাইদহ শহরের একাধিক স্থানে বহুতল ভবন তৈরি ও জায়গা জমি কিনেছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঝিনাইদহ গোয়েন্দা বিভাগের এসআই শরীফ হোসেন জানান, আদালতে এ নিয়ে একটি হত্যা মামলা হয়েছে। ফলে আদালতের নির্দেশে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তে বোঝা যাবে মৃত্যুর সঠিক কারণ।
এমবি