অচেতন অবস্থায় ৪৫ বছর বয়সী এক নারীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে রেখে যান অজ্ঞাত ব্যক্তিরা। জ্ঞান ফিরলে ওই নারীকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে গেলেও নিতেন না তিনি। শুধু খাবার ও পানি দিলে খেতেন ওই নারী। এ নিয়ে বিপাকে পড়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
তার পরিচয় না পেয়ে জানানো হয় স্থানীয় থানায়। কিন্তু পুলিশও তার কোনো পরিচয় খুঁজে পাননি। এভাবে হাসপাতালে দীর্ঘ প্রায় দুই মাস থাকার পর অবশেষে ওই নারীর শেষ পরিচয় হল ‘কবর’। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার দাফনের ব্যবস্থা করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আশরাফুল ইসলাম ওই নারীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ অক্টোবর সন্ধ্যায় কে বা কারা অজ্ঞাত ওই নারীকে কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেখে যান। সে দিন থেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু ওয়ার্ডের সামনের বারান্দায় চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে ছিলেন তিনি। কিন্তু এযাবৎ তিনি তেমন কোনো চিকিৎসাসেবা নেননি। তবে খাবার আর পানি দিলে, তা খেয়ে আবারও শুয়ে থেকেছেন। এ ব্যাপারে তাকে নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আশরাফুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ ৫০ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বারান্দায় ছিলেন ওই নারী। সেই থেকে তার খাওয়াদাওয়াসহ ওষুধপত্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎ মারা যান তিনি। এরপর ওনার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কোটচাঁদপুর থানাকে অবহিত করা হয়। তারপরও অজ্ঞাত ওই নারীর কোনো পরিচয় না পেয়ে শুক্রবার দুপুরে কোটচাঁদপুর কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।
কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আমানুল্লাহ আল-মামুন বলেন, গত ২৩ অক্টোবর কে বা কারা ওই নারীকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে রেখে যান। সেই থেকে আমরা তাকে ভর্তি করে চিকিৎসা, খাবার সরবরাহ করেছি। তিনি বৃহস্পতিবার রাতে মারা যাওয়ার পর বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানা কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। তার পরিচয় না পাওয়ায় দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কোটচাঁদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন মাতুব্বর বলেন, বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিঠি দিয়েছিল। তবে তার কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এম বুরহান উদ্দীন/এমবি