Logo
Logo

সারাদেশ

ঝিনাইদহে পৃথক সংঘর্ষে আহত ২৫

Icon

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০:৫২

ঝিনাইদহে পৃথক সংঘর্ষে আহত ২৫

ছবি : বাংলাদেশের খবর

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় বিয়ে বাড়িতে উচ্চ আওয়াজে সাউন্ডবক্স বাজানোকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ১৫ জন ও হরিণাকুণ্ডু উপজেলায় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। 

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে শৈলকুপার আলমডাঙ্গা ও বিকেলে হরিণাকুণ্ডু উপজেলার হরিশপুর গ্রামে ঘটনা ‍দুটি ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার দুপুরের দিকে শৈলকুপা উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের আলমডাঙ্গার গ্রাম্য দুই মাতুব্বর লিটন ও হেলালের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয় 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার রাত থেকে ছেলের বিয়ে উপলক্ষে হেলালের সমর্থক নাসিরের বাড়িতে সাউন্ডবক্সে গান বাজছিল। শুক্রবার সকালেও অনেক আওয়াজ করে সাউন্ডবক্সে গান বাজানো হচ্ছিল। সে সময় লিটনের সমর্থক মাহফুজ সাউন্ডবক্স বন্ধ করতে বলেন। এ সময় নাসিরের লোকজনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় মাহফুজের। এরই জেরে দুপুরের দিকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দুই পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সে সময় লিটনের সমর্থক সাঈদ, মজনু, মাহফুজ, জামাল আহত হন। হেলালের সমর্থক হৃদয়, সাদ্দাম, সাহাদুল, নাজের, রত্না আহত হন। সংঘর্ষ চলাকালে উভয় পক্ষের কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর হয়। 

শৈলকুপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুম খান বলেন, ‘বিয়ে বাড়িতে সাউন্ডবক্স বাজানোকে কেন্দ্র করে আলমডাঙ্গা গ্রামে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারীসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। বর্তমান গ্রামের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’

অন্যদিকে একই দিন বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার হরিশপুর গ্রামের লালন বাজার এলাকায় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে লালন বাজার এলাকায় সাবেক সংসদ সদস্য মৃত মসিউর রহমানের অনুসারীদের কর্মীসভা চলছিল। সেখানে মসিউর রহমানের ছেলে ও জেলা বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. ইব্রাহিম রহমান উপস্থিত ছিলেন। একই সময়ে পাশের জটারখালি বাজার এলাকায় সভা করছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ সমর্থক ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীরা। সেখানে দলটির জেলা কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক আফাঙ্গীর হোসেন এবং উপজেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রিয়াজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

পাশাপাশি দুই পক্ষের সভাকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে তারা সংঘর্ষে জড়ান। উভয়পক্ষ লাঠি নিয়ে একে অপরের ওপর হামলা চালায়। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন।

আহতরা হলেন- হরিশপুর গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে আলামিন হোসেন (৩২), আশান মন্ডলের ছেলে মন্টু মন্ডল (৪৩), জেলা বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক আফাঙ্গীর বিশ্বাস (৪৬) ও পার্বতীপুর গ্রামের নুপুর মন্ডলের ছেলে বাপ্পী হোসেনসহ ১০ জন। এদের মধ্যে আফাঙ্গীর বিশ্বাস জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এ মজিদের অনুসারী এবং অন্যরা সাবেক সংসদ সদস্য মসিউর রহমানের ছেলে ও জেলা বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক বাবুর অনুসারী বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী

ডা. ইব্রাহিম রহমান বাবু অভিযোগ করেন, ‘লালন বাজার এলাকায় তাদের কর্মীসভা চলছিল। তখন সেখানে দেশীয় অস্ত্র ও লাঠি নিয়ে হামলা চালায় মজিদ সমর্থকরা। এ সময় তাদের লোকজনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করা হয়। তাদের সভাস্থলের মঞ্চ ও চেয়ার ভাঙচুর করা হয়েছে।’

অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আফাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘ওই এলাকায় আওয়ামী লীগের লোকজন নিয়ে সভা করছিল প্রতিপক্ষরা। এ নিয়ে একটু উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল। আমি সেটি সামাল দিতে গেলে তারা আমার ওপর আক্রমণ করে।’

হরিণাকুণ্ডু হাসপাতালের চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘হাসপাতালে আসা চারজনের মধ্যে দুই জনকে ভর্তি করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে। তার মাথার পেছনে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বাকি দুই জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।’

হরিণাকুণ্ডু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এমএ রউফ খান বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। বর্তমানে ওই এলাকার অবস্থা স্বাভাবিক আছে।’

এম বুরহান উদ্দীন/বিএইচ

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর