সারাদেশের ন্যায় আমতলীতেও শীতের তীব্রতা বেড়েছে। শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে আমতলীর উপজেলার শহর বন্দর ও গ্রামগুলোতে ফুটপাত থেকে শুরু করে বিভিন্ন বাজারের গার্মেন্টসে ভিড় জমিয়েছেন শীতবস্ত্র ক্রেতারা।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) আমতলী উপজেলার বাজারগুলোতে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ছোট-বড় শপিংমল ও ফুটপাতের দোকানগুলোতে গরম কাপড়ের চাহিদা বেড়েছে। শিশু ও বয়স্কদের কাপড় কেনার চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ। তবে শপিংমলগুলোতে দাম বেশি হওয়ায় নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ ঝুঁকছে ফুটপাতের দোকানগুলোতে। গত বছরের চেয়ে এ বছর দাম একটু বেশি হওয়ায় শীতবস্ত্র কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন দরিদ্র মানুষেরা। ফুটপাতের দোকানগুলোতে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে বেচাকেনা। এবছর আগেভাগেই ক্রেতার ভিড় বাড়ায় বিক্রেতারাও বেশ খুশি।
এতে আমতলী শহরের চৌরাস্তা, কলেজ রোড, একেস্কুল রোড, মহিষকাটা, আরপাংশিয়া, তারিকাটা, গাজিপুর, কুকুয়ার হাট নামক বাজারে বিক্রি হচ্ছে শীতবস্ত্র। এছাড়াও গার্মেন্টসে বেচাকেনার ধুম পরেছে।
বিক্রেতারা আমতলী পৌরসভার মেয়র মার্কেটের দোকানি নাঈম জানান, জ্যাকেট ৭০০-২৩০০ টাকায় সোয়েটারসহ নানা ধরনের শীতের পেষাক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। ফুটপাতগুলোতে কম মূল্যে নতুন কাপড়ও বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
শহরের একেস্কুল এলাকার ফুটপাতের ব্যবসায়ী মো. আবদুর রাজ্জাক জানান, ক্রেতাদের ভিড় শুরু হয়েছে। আমরাও চাহিদা মতো শীতবস্ত্র ভ্যান ও মাটিতে দোকান বসিয়ে বিক্রি করছি। বড়দের কাপড়ের পাশাপাশি শিশুদের কাপড়ও বেশি বিক্রি হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, শীতের কাপড় কিনতে আসছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষরা। বিশেষ করে ছুটির দিনে বেশি ভিড় হয়। এছাড়াও প্রতিদিনই শীতের কাপড় বিক্রি হচ্ছে। আমরা শীতের মৌসুমে এই পুরাতন কাপড়ের ব্যবসা করি। শীতের কয়েক মাসের আয় দিয়ে আমাদের সারা বছর চলে। আমি প্রায় ২০ বছর ধরে এই ব্যবসা করছি। ফুটপাতে সোয়েটার বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা, টাইস ২০০-২৫০ টাকা, কানটুপি ১২০-১৮০ টাকা, কান পট্টি ৫০-৬০ টাকা।
কলেজ রোডের পিছনে মার্কেটের পুরোনো কাপড় বিক্রেতা মনজু বলেন, দোকানে প্রচুর ভিড়। ক্রেতাদের চাহিদা মতো কাপড় আনার চেষ্টা করছি। কিন্তু এ বছর পুরাতন কাপড়ের বেল্টের দাম অনেক বেশি। অন্য যেকোনো বছরের চেয়ে এবার শীতের কাপড়ের চাহিদাও বেশি। গভীর রাতেও ক্রেতাদের ভিড় কমছে না। বাধ্য হয়েই রাত ১১টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখতে হচ্ছে। প্রকারভেদে জ্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত।
ফুটপাতে পুরাতন জ্যাকেট কিনতে আসা মো. খোকন রারি বলেন, কুয়াশার ভেতরে ভোরবেলায় রিকশা নিয়ে বের হতে হয়। শীতে একেবারে কাহিল হয়ে যাই। ভাবছিলাম দুই থেকে আড়াইশোর মধ্যে একটা জ্যাকেট কিনবো। এসে দেখি দাম বেশি। তাই ৩৫০ টাকা দিয়ে জ্যাকেটটা কিনলাম।
শীতবস্ত্র কিনতে আসা রিকশা চালক মো. বশির ঘরামী জানান, এ বাজারে গরিবসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ গরম কাপড় কিনতে পারেন। তবে গরিব মানুষের শীতবস্ত্র কেনার নির্ভরতার প্রতীক এ বাজারের দোকানগুলো। দাম হাতের নাগালে থাকায় সবাই সাধ্যমতো গরম কাপড় কিনতে পারছি।
তিনি আরও জানান, অন্যান্য শপিংমলের ভেতর থেকে কিনতে গেলে দাম অনেক বেশি পড়ে, তাই বাইরে থেকে কিনছি। প্রতি বছরের তুলনায় এবার দাম একটু বেশি নিচ্ছে। শীতবস্ত্র যেহেতু লাগবেই তাই টাকার কথা চিন্তা করছি না।
এছারাও নিম্ন আয়ের মানুষরা জানান, বড় শপিংমল ও শোরুমে সুন্দর কাপড় থাকলেও দাম তাদের সামর্থ্যের বাইরে। এজন্য তারা ফুটপাতের দোকানে আসছেন। এখানে পুরাতন কাপড় কম দামে পাওয়া যায়।
সুমন রশিদ/এমবি