টঙ্গীবাড়ীতে সেতুর অভাবে লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ
মাল্টিমিডিয়া করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩:১৭
ছবি : বাংলাদেশের খবর
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার দিঘিরপাড় ইউনিয়ন বাজারের পশ্চিম পাশ দিয়ে প্রবহমান পদ্মার শাখা নদী। নদীটির ওপর সেতু না থাকায় দুর্ভোগে দিন পার করছেন দিঘিরপাড়, কামারখাড়া, হাসাইল বানারি ও পাঁচগাঁও ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার লক্ষাধিক মানুষ। ঝুঁকি নিয়ে নৌপথে যাতায়াতই এখন এই অঞ্চলের মানুষের একমাত্র ভরসা। বিশেষ করে ঝড়-তুফান এবং রাতের অন্ধকারে নদী পারাপারের সময় তাদের যাত্রা চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে।
টঙ্গীবাড়ী উপজেলার সঙ্গে মুন্সীগঞ্জ জেলা শহর এবং রাজধানী ঢাকার যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম এ শাখা নদী। এ নদী পারাপারের একমাত্র মাধ্যম ট্রলার, যা ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরও ঠিক সময়ে পাওয়া যায় না। কখনো কখনো অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হয়, যা স্থানীয়দের জন্য এক বিরাট সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে গেছে, দিঘিরপাড়ে পদ্মার শাখা নদীতে একটি সেতুর অভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন লক্ষাধিক মানুষ। এই নদীতে একটি সেতু নির্মাণ হলে টঙ্গীবাড়ীর বাসিন্দাদের পাশাপাশি উপকৃত হবেন পার্শ্ববর্তী চাঁদপুর, কুমিল্লা ও শরীয়তপুর জেলার সীমান্তবর্তী বেশ কয়েকটি অঞ্চলের মানুষ। কিন্তু সেতু না থাকায় এসব এলাকার বাসিন্দাদের জন্য পদ্মার শাখা নদী পারাপারে এখন ট্রলারই একমাত্র ভরসা।
দিঘিরপাড় বাজারে গেলে চোখে পড়ে, পদ্মার শাখা নদীর পূর্বপাড় থেকে ট্রলারভর্তি মানুষ আসছেন। ট্রলার থেকে নেমে দিঘিরপাড় বাজার, টঙ্গীবাড়ী উপজেলা পরিষদ, মুন্সীগঞ্জ শহর ও রাজধানী ঢাকার দিকে ছুটছেন তারা। একইভাবে এখান থেকে ট্রলার ভর্তি করে নদীর পশ্চিম ও দক্ষিণপাড় যাচ্ছেন।
এছাড়া নদীর উত্তর এবং দক্ষিণ পাশ থেকে ট্রলার ভর্তি করে দিঘীরপাড় হাটে মালপত্র বিক্রি করতে আসছেন অনেকে। কেউ আবার হাট থেকে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও কৃষি কাজের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে বাড়ি ফিরছেন।
শরীয়তপুর নড়িয়া উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মাসুদ আলম বলেন, ‘আমরা শরীয়তপুরের মানুষ হলেও আমাদের সব কাজকর্মের জন্য মুন্সিগঞ্জেই সুবিধা বেশি। আমাদের হাটবাজার করতে হয় দিঘিরপাড় বাজারে। ঢাকায় যাই এ-পথ দিয়েই। বেশি রাত হলে ট্রলার পাওয়া যায় না। ট্রলার পেলেও ৫০ টাকার ভাড়া ৫০০ টাকা দিতে হয়। নদীপথে সময় লাগে বেশি।’
স্থানীয় কলেজশিক্ষার্থী রিফাত খালাসী বলেন, ‘দিঘিরপাড় খেয়াঘাট থেকে আমার বাড়ির দূরত্ব প্রায় দুই কিলোমিটার। নদীর পশ্চিমপাড়ে সড়কের অবস্থা তেমন ভালো নয়। যাত্রীবাহী কোনো যানবাহন চলে না। এই রাস্তা পাড়ি দিয়ে দিঘীরপাড়ে আসা-যাওয়া করতে মোটরসাইকেলে ২০০ টাকা ভাড়া দিতে হয়। সেতু না থাকায় ঘাটে এসে ট্রলারের জন্য প্রতিদিন ৩০-৪০ মিনিট বসে থাকতে হয়। ’
টঙ্গীবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী শাহ মোয়াজ্জেম জানিয়েছেন, দিঘিরপাড় বাজারের পদ্মার শাখা নদীর ওপর ১০০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া, নদীর পশ্চিম পাশে ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি আরসিসি সড়ক নির্মাণেরও প্রস্তাব রয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্পের জন্য বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দল মাটি পরীক্ষা ও সার্ভে কাজ শেষ করেছে। এখন নকশা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ চেয়ে চিঠি পাঠানো হবে।’
এটিআর/