Logo
Logo

সারাদেশ

অবাধে ভারতীয় পণ্য পাচারের সড়ক পথ শেরপুর-জামালপুর!

Icon

মাল্টিমিডিয়া করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮:৩০

অবাধে ভারতীয় পণ্য পাচারের সড়ক পথ শেরপুর-জামালপুর!

শেরপুর-জামালপুর সড়ক দিয়ে প্রতিদিন পাচার হচ্ছে ভারতীয় বিভিন্ন অবৈধ পণ্য। মাদকদ্রব্য থেকে শুরু করে পাচার হচ্ছে লাখ লাখ টাকার নিত্য প্রয়োজনীয় নানা পণ্যদ্রব্য। এই পথের বিভিন্ন পয়েন্টে এসব অবৈধ মালামাল পাচারে সহযোগিতা করছে স্থানীয় পাচার চক্রের বিভিন্ন দল।

শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে একটি ট্রাক ভারতীয় জিরা আটক করেছে ডিবি পুলিশ। যা বর্তমানে জামালপুর সদর থানায় রয়েছে। ছাড়াতে ভুয়া কাগজ তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে জামালপুর জেলার ডিবির অফিসার ইনচার্জ নাজমুজ সাকিব সাংবাদিকদের জানান, জিরা আটক হয়েছে। এখন কাগজ-পত্র যাচাইবাছাই চলছে। 

জানা গেছে, ভারতীয় বিভিন্ন নামি-দামি ব্র্যান্ডের মদ, ফেনসিডিল, গাঁজাসহ ভারতীয় সীমানা প্রাচীর পেরিয়ে ঢুকছে জামালপুরের সীমান্তবর্তী উপজেলায়। এরপর নদী পার হয়ে প্রবেশ করেছে শহরে। পাচার হওয়া এসব অবৈধ মালামাল শেরপুর থেকে জামালপুর হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে সারাদেশে। শেরপুর-জামালপুর রোডে কোনো ধরনের চেকপোস্ট না থাকায় এই রাস্তাটিকে নিরাপদ মনে করছে পাচারকারীরা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকার শেরপুর ও জামালপুরের বেশ কয়েকটি চোরাই পথ দিয়ে প্রতিনিয়ত আসছে ভারতের চিনি, মাদক, কসমেটিকসসহ অন্যান্য অবৈধ মালামাল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাঝেমধ্যে অভিযানে এসব অবৈধ মালামাল আসা ঠেকানো যাচ্ছে না। এর ফলে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

চোরাইপথে আনা কিছু পণ্যের কাস্টমস থেকে নিলামে কেনা স্লিপ ব্যবহার করছে চোরাকারবারিরা। সীমান্তঘেঁষা শেরপুরে নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতি ও জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্ট এখন ভারতীয় পণ্যের আখড়া। সীমান্তবর্তী এসব উপজেলা দিয়ে ভারতীয় পণ্যের অবৈধ চালানগুলো দেশের বিভিন্ন বাজারে চলে যাচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, বেশিরভাগ ভারতীয় অবৈধ পণ্য শেরপুর থেকে ব্রহ্মপুত্র ব্রিজ পার হয়ে জামালপুর শহরের ডাকপাড়া এলাকা হয়ে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রবেশ করছে। পরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাচ্ছে সারাদেশে। শুধু তাই নয়, পুলিশের চোখ ফাঁকি দিলেও এসব অবৈধ মাল বোঝাই পিকআপ, ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান ব্রহ্মপুত্র ব্রিজ পার হওয়ার পর  মাঝেমধ্যে আটক হয় কথিত সাংবাদিক ও স্থানীয় কিছু চক্রের হাতে। পরে রফাদফা করে ওই চক্র ভারতীয় অবৈধ পণ্য বোঝাই বাহনকে নিরাপদে তার গন্তব্যে পৌঁছাতে সাহায্য করে। আর রফাদফায় বিঘ্ন ঘটলে তা চলে যায় স্থানীয় প্রশাসনের অধীনে।

বেশ কয়েকজন পিকাপ, ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান চালক জানান, শেরপুর-জামালপুর রোডে গাড়ি চালাতে গেলে তাদের মাঝে মধ্যেই বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। গাড়িতে বৈধ মালামাল না থাকলেও কতিপয় লোক সাংবাদিক পরিচয়ে পথ আটকে দেয় এবং নানান প্রশ্ন করতে থাকে। অনেকসময় গাড়ির কাগজপত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্সও চেক করে তারা। কোনো রকম গরমিল পেলে তারা চাঁদা দাবি করে। পাশাপাশি দেখানো হয় প্রশাসনের ভয়ভীতি। ভোগান্তি দিনদিন বেড়েই চলছে বলে জানান তারা।

এ বিষয়ে ট্র্যাফিক পুলিশের ভূমিকা জানতে জামালপুর ট্র্যাফিক বিভাগের টিআই জাহাঙ্গীর আলমকে টানা দুইদিন একাধিক বার ফোন দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সাল মো. আতিক সাংবাদিকদের বলেন, যারা এ সকল কাজের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, সে যেই হোক। 

এ বিষয়ে জামালপুর জেলার পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, এ ধরনের কাজের সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

এমবি 

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর