পদত্যাগে বাধ্য করতে নারী প্রধান শিক্ষিককে মারধর
বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯:৫৭
পটুয়াখালী বাউফলের এক প্রধান শিক্ষককে পদত্যাগে বাধ্য করতে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) রাতে বাজেমহল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পারভীন বেগম (৫৪) একই বিদ্যালয়ের সহকারী ৪ শিক্ষকের বিরুদ্ধে বাউফল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। এর আগেও একবার তাকে মারধর করা হয়।
বিদ্যালয় ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শংকর দাস, মুশফিকা জাহান নুপুরসহ একটি চক্র তাকে প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে পদত্যাগ করার জন্য চাপ সৃষ্টি করে আসছেন। তিনি পদত্যাগ না করায় ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ও পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিলেন।
মঙ্গলবার ওই প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে গেলে অভিযুক্তরা তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। এক পর্যায়ে জোর করে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেন। এর আগেও গত ১৯ আগস্ট অভিযুক্ত শিবশংকর, মুশফিকা জাহানসহ অজ্ঞাত ১৫-২০ জন দুষ্কৃতকারী অফিস কক্ষে ঢুকে তাকে পদত্যাগ করতে বলপ্রয়োগ করেন এবং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। জোর করে একাধিক সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে তার অফিস কক্ষ তালা দিয়ে দেয়। এ ঘটনার পর থেকে ওই শিক্ষককে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে দেওয়া হয় না। বিদ্যালয়ে যেতে চাইলে বাধা দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষিক পারভীন বেগম বলেন, ‘আমি সততার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছি। বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য অনেক কাজ করেছি। কখনো কোনো দুর্নীতি-অনিয়ম করিনি। দেশের পটপরিবর্তনের সুযোগ নিয়ে কয়েকজন সহকারী শিক্ষক আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে। আমাকে পদত্যাগ করতে চাপ সৃষ্টি করে। আমি পদত্যাগ না করায় তারা আমাকে বারবার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী শিক্ষক শিবশংকর বলেন, ‘সব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট । আমরা তাকে মারধর করিনি। তিনি (প্রধান শিক্ষক) হয়রানি করার জন্য আমাদেন বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।’ একই কথা জানান আরেক অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক মুশফিকা জাহান নুপুর।
এ বিষয়ে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আরিফুল ইসলাম সাগর/এমজে