ছবি : বাংলাদেশের খবর
উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে চলতি মৌসুমে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গত দুই দিন ধরে কনকনে শীতে বিপাকে পড়েছে এখানকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। তবে শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকালে ঝলমলে রোদের দেখা মিলেছে এ জেলায়। নিম্ন আয়ের মানুষের আয় রোজগার অনেকটা কমে গেছে। কেউ কেউ কাগজের কাটন, শুকনো কাঠ-খড়ি জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রির সেলসিয়াস। যেসব এলাকায় দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেসব এলাকায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। সে হিসেবে উত্তরের এ প্রান্তিক জেলার উপর দিয়ে বইছে ২ দিন ধরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঝলমলে রোদ নিয়ে উঠে গেছে ভোরের সূর্য। কনকনে শীতে কাঁপছে এ জেলার মানুষ। রাতভর বরফের মতো ঠান্ডা বাতাসে কাবু করে তুলছে এ এলাকার আপামর মানুষদের। শুক্রবার রাত ৯টার পর থেকেই শহরের হাটবাজারগুলোতে জন কোলাহল কমতে থাকে। বাজারের কোথাও কোথাও কাগজের কাটন, শুকনো কাঠ খড়ি জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা যায়।
তবে জীবিকার তাগিদে হাড়কাঁপানো শীতের মধ্যেই গায়ে শীতের কাপড় পড়ে কাজে বের হতে দেখা গেছে কর্মজীবী মানুষদের। এদের মধ্যে কেউ যাচ্ছেন নদীতে পাথর তুলতে, কেউ চা বাগানে, কেউ ভোরের টাটকা সবজি তুলে খেতে। তবে ঘন কুয়াশা না থাকায় সকাল সাড়ে সাতটার দিকে পূর্ব আকাশে দেখা মেলে পুবালি সূর্য। ধীরে ধীরে ফুটতে থাকে ঝলমলে রোদ। আর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে মানুষের কর্মব্যস্ততা। তবে উত্তরের ঝিরিঝিরি বাতাসের কারণে দুর্ভোগ বাড়িয়েছে শীতের তীব্রতায়।
স্থানীয়রা জানান, তিনদিন ধরে যেন মনে হচ্ছে রাতে তাপমাত্রা শূন্যতে নেমে এসেছে। এমন ঠান্ডা, কাপড়ের পর কাপড় পরলেও ঠান্ডা লাগে। বিশেষ করে উত্তর দিক থেকে ধেয়ে আসা পাহাড়ি বাতাসের কারণে শীতের তীব্রতা বাড়ছে কয়েকগুণ। খেটে খাওয়া মানুষদের বেড়েছে দুর্ভোগ।’
এদিকে তীব্র শীতের কারণে বেড়েছে বিভিন্ন শীতজনিত রোগব্যাধি। প্রতিদিন সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে রোগীরা ছুটছেন হাসপাতালে। এসব রোগীর মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধ মানুষের সংখ্যা বেশি। যারা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন তারাই কেবল হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। চিকিৎসকরা চিকিৎসার পাশাপাশি শীতে সুরক্ষা থাকতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে জেলার প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ বলেন, ‘কয়েকদিন পর আজকে আবার ১০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা নেমেছে। শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রির সেলসিয়াস।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেসব এলাকায় দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেসব এলাকায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। সে হিসেবে উত্তরের এ প্রান্তিক জেলার উপর দিয়ে বইছে দুই দিন ধরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ।’
এসকে দোয়েল/এমআই