Logo
Logo

সারাদেশ

বন্ধুর বাসার মাটি খুঁড়ে মিলল নিখোঁজ রিকশাচালকের লাশ

Icon

ফরিদপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭:৩১

বন্ধুর বাসার মাটি খুঁড়ে মিলল নিখোঁজ রিকশাচালকের লাশ

ফরিদপুরে‌ এক তরুণ রিকশাচালকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজের চারদিন‌ পর শনিবার (৪জানুয়ারি) দুপুরে শহরের চুনাঘাটা মডেল টাউন এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। একটি রিকশা চুরির লোভে তাকে তারই বন্ধু হত্যা করে ঘরের পেছনে মাটির নিচে গেড়ে রাখে বলে পুলিশ জানায়। 

নিহত ওই রিকশা চালকের নাম হালিম শেখ (২৫)। সে শহরের আলিপুর গোরস্থান এলাকার মৃত আব্দুর রব শেখের ছেলে। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে‌ হালিম মেজো ছিল। 

এ ঘটনায় রনি মোল্যা (২৫) নামে হালিমের ওই বন্ধুর স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।

জানা গেছে, রনি মোল্যা নরসিংদি জেলার রায়পুর এলাকার আব্দুল মতিনের পুত্র। মাত্র দেড় মাস আগে‌‌ সে চুনাঘাটা মহল্লার ওই‌ বাড়িতে ভাড়াটিয়া হয়ে উঠে। স্থানীয়দের সন্দেহের বিষয়টি বুঝতে পেরে সকালেই রনি স্ত্রীকে রেখে বাসা থেকে পালিয়ে যান।

নিহতের বড় বোন সাথী আক্তার ও স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত ৩১ ডিসেম্বর রাত ৮টায় বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ ছিলেন হালিম। নিখোঁজের আগে ওইদিন রনির মোল্যার সাথে হালিমকে ঘুরতে দেখেছিল স্থানীয়রা। শুক্রবার কোতয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করা হয়। 

এদিকে, শুক্রবার সকালে হালিমের পরিবারের লোকজন চুনাঘাটা মডেল টাউনের মো. মোখলেসুর রহমানের বাড়ির ভাড়াটিয়া রনির বাসায় এসে ভেতর থেকে গেট আটকানো দেখতে পায়। একপর্যায়ে গেট ভেঙে  ভিতরে গিয়ে একটি দোচলা টিনের ঘরের ভেতর হালিমের রিকশাটি দেখতে পান তারা। এরপরে ওই ঘরের পেছনে বালি-মাটি দিয়ে কিছু ঢেকে রাখা দেখতে পেয়ে থানা পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ এসে দুপুর দেড়টার দিকে মাটি খুঁড়ে প্লাষ্টিকের বস্তা দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় পুঁতে রাখা হালিমের মৃতদেহটি উদ্ধার করে। 

ওই রিকশার মালিক নূর ইসলাম জানান, গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে হালিম তাকে ফোনে জানায় সে রাতে গ্যারেজে যাবে না, এক আত্মীয়র বাড়িতে বেড়াতে গেছে। পরেরদিন ফিরবে। একপর্যায়ে আমরা জানতে পারি, হালিমের বন্ধু রনি মোল্যা তাকে ভাড়া করে নিয়ে যায়। পরে রনির বাড়িতে এসেই‌ তার লাশ পেলাম।

এদিকে, এ ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস.) শৈলেন চাকমা, কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাউদজ্জামানসহ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তা ও সদস্যরা। 

ফরিদপুরের পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল জানান, গত ৩১ ডিসেম্বর একসাথে ওয়াজ শুনে রিকশা চালক হালিম তার বন্ধু রনির সাথে চুনাঘাটার বাসায় আসে। এরপর থেকে তার সন্ধান না পেয়ে শুক্রবার কোতোয়ালি থানায় একটি জিডি করে তার পরিবারের সদস্যরা।  এরপর হালিমের স্বজনদের সন্দেহের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে হালিমের লাশ উদ্ধার ও তার রিকশার‌ সন্ধান‌ মিলে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রনির স্ত্রীকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। 

পুলিশ সুপার বলেন, লাশের ঘাড়ে কোপের চিহ্ন রয়েছে। সম্ভবত তাকে কুপিয়ে হত্যার পরে এখানে পুঁতে রাখা হয়। শীঘ্রই রনিকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মুর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মূল সন্দেহভাজন রনির স্ত্রীকে ঘটনাস্থল থেকে থানায় নেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, এর মাত্র একদিন আগেই একই এলাকা থেকে হুসাইন নামের ১৩ বছরের এক রিকশাচালকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এছাড়া আমিনুর রহমান নামে আরও এক রিকশাচালক গত বৃহস্পতিবার থেকে নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে।

অপূর্ব আসীম/এমএইচএস

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর