Logo
Logo

সারাদেশ

চাঁদপুরে মাথা গোঁজার ঠাঁই পেল সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা

Icon

চাঁদপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬:৫৬

চাঁদপুরে মাথা গোঁজার ঠাঁই পেল সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

একটি সন্তানের জন্য পৃথিবীর সব চাইতে নিরাপদ স্থানটি হচ্ছে তার বাবা-মায়ের কোল। সন্তানের জন্ম থেকে শুরু করে জীবন-যৌবনের প্রতিটি মুহূর্তে মাথার ছাদ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে বাবা-মা। বাবা-মার কাছে সন্তানের গুরুত্ব যেমন অপরিসীম তেমনই সন্তানের কাছেও বাবা মা এর গুরুত্ব সবচাইতে বড়।

কিন্তু সমাজের এমনও সন্তান রয়েছে বাবা মা এর ছায়াতো দূরে থাক বাবা মা কেও অনেকে দেখতে পায়নি। অনুভব করতে পারে নি বাবা মা এর আদর ভালোবাসা।

অযত্নে অবহেলায় বেড়ে উঠা আমাদের সমাজের আশেপাশে অনেক ছোট ছোট এতিম, অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বাবা মা তো দূরে থাকুক নিজ ঠিকানাও খুঁজে পায়নি। পায়নি তাদের নিজ নিজ অধিকার। আর সেইসব সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করতে এবং তাদের বাবা মা এর মত আদর ভালোবাসা দিয়ে নিজ ঠিকানা এনে দিলেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসন। অযত্নে অবহেলায় বেড়ে উঠা এতিম-অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত অর্ধশত শিশু পেল নতুন ঠিকানা শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রে।

সরকারের নির্দেশনায় চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিনের সহযোগিতায় এবং জেলা সমাজসেবার তত্ত্বাবধানে চলতি মাসে উদ্বোধন হলো ১০০ শয্যা বিশিষ্ট সমন্বিত শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র (বালিকা)। যেখানে অসহায় ও এতিম শিশুদের বেড়ে উঠার যেমন পেয়েছে নিজ ঠিকানা তেমন পেয়েছে সব ধরনের সুবিধা। পেয়েছে নিজ অধিকার।

কথা হয় নতুন ঠিকানা পাওয়া শিশু ছোঁয়া আক্তার মীম, সামিয়া, ফাহমিদা ও রীমা আক্তারের সাথে। তাদের প্রত্যেকের বয়স ৮-১২ বছর। তারা খেলার ছলে ও মিষ্টি হাসিমুখে বাংলাদেশের খবরে‘র প্রতিবেদককে জানায়, ‘এখানে সবাই আমাদেরকে আদর দেয়, খেলতে দেয় এবং পড়াশুনা করতে দেয়। আগে এসব কিছুই পেতাম না। এখানে আমাদের অনেক বন্ধু হয়েছে। আমরা একসাথে পড়াশোনা করতে পারি। ভালো লাগে এখানকার সবাইকে।’

প্রতিষ্ঠানের সার্বিক প্রসঙ্গে উপপ্রকল্প পরিচালক সৈয়দা হাসিনা বেগম বলেন, ‘আমরা প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি শিশুকে অত্যন্ত যত্নসহকারে পরিচর্যা করে থাকি। আমরা শিশুদের নিজের সন্তানের থেকেও বেশি গুরুত্ব দেই। তাদের বেড়ে উঠার প্রত্যেকটি সময় আমরা খেয়াল রাখি যেন কোনো রকমের কমতি না হয়।’

চাঁদপুর জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সমাজে এমন অনেক শিশু রয়েছে যারা বাবা-মায়ের আদরসহ সবধরনের অধিকার থেকে বঞ্চিত। চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় তৈরি হওয়া এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা সেসব শিশুদের অভিভাবক পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ প্রতিষ্ঠানে তারাই থাকতে পারবে যাদের এ সমাজে বাবা মা-বা নিকটতম আত্মীয় স্বজন বেঁচে নেই। যাদের বাবা-মা ছাড়াও নিকটতম আত্মীয় স্বজন রয়েছে সেসব শিশুদের আমরা তাদের নিকটকম আত্মীয়-স্বজনদের কাছে কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে দিয়ে দিব। প্রয়োজনে আমরা তাদের কিছু দায়িত্ব নিব।’

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, ‘আমরা চাই না সমাজে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান থাকুক। কারণ, বাবা-মায়ের আদর ভালোবাসা কেউ পূরণ করতে পারে না। যার বাবা-মা নেই, সে জানে তার মর্ম কি। বাবা-মা ছাড়াও নিজ পরিবারের আত্মীয় স্বজনদের মাঝে থেকে বেড়ে ওঠা আর পুনর্বাসন কেন্দ্রে বেড়ে উঠার মধ্যে অনেক পার্থক্য।’

আল-আমিন ভুঁইয়া/এমআই

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর