ক্রেতা পাচ্ছেন না মিষ্টি কুমড়া চাষিরা, লোকসানের আশঙ্কা
চাঁদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:১০
ছবি : বাংলাদেশের খবর
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলায় গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ জমিতে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ফলনও ভালো হলেও কৃষকরা সমস্যায় পড়েছেন। কারণ তাদের উৎপাদিত কুমড়া কিনতে পাইকাররা আসছে না। জমিতেই পাকতে থাকা কুমড়া বিক্রি করতে না পারলে কৃষকদের বোরো আবাদে সমস্যা হতে পারে। তবে স্থানীয় কৃষি বিভাগ কৃষকদের এসব কুমড়া বাজারে নিয়ে বিক্রির পরামর্শ দিয়েছে।
এ বছরের মিষ্টি কুমড়ার আবাদ সবচেয়ে বেশি হয়েছে হাজীগঞ্জের ডাকাতিয়া নদী এলাকায়। বিশেষ করে পলিমাটি ঘেরা বলাখলা ও শ্রীনারায়ণপুর, অলিপুর গ্রামে। সাধারণত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মিষ্টি কুমড়ার আবাদ করা হয়। এবার এলাকার কৃষকরা ভালো ফলন পেয়েছেন।
হাজীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, উপজেলার প্রায় ৬১৮ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়া আবাদ হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। এই অঞ্চলের মাটি উর্বর হওয়ায় শাকসবজি আবাদে সময়, শ্রম ও খরচ কম হওয়ায় কৃষকরা প্রতি বছর মিষ্টি কুমড়ার আবাদ বাড়াচ্ছেন।
এ বছর বলাখাল ও শ্রীনারায়ণপুর এলাকায় কৃষকরা হাইব্রিড জাতের মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছেন। বিক্রির সময় এসেছে। তবে পূর্ববর্তী বছরগুলোর মতো এ বছর পাইকাররা আসছেন না। বলাখাল এলাকার কৃষক জসিম উদ্দিন বলেন, ‘প্রতি বছর ঢাকার কারওয়ান বাজার, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও লক্ষীপুর থেকে পাইকাররা এসে কুমড়া কিনে নিতেন, কিন্তু এ বছর পাইকারদের দেখা নেই। যদি ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে কুমড়া বিক্রি না হয়, তবে বোরো ধান চাষ করতে পারব না।’
অলিপুর গ্রামের কৃষক ছিদ্দিক বলেন, ‘প্রতি বছর পাইকাররা এসে মিষ্টি কুমড়া কিনে নিত, প্রতি পিস কুমড়া ৫০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হতো। তবে এবার পাইকারি দাম নেই। স্থানীয় বাজারে ৬ থেকে ৭ কেজি ওজনের একটি কুমড়া ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি করছি, তাও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না।’
হাজীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলরুবা খানম বলেন, ‘এ বছর হাজীগঞ্জ উপজেলায় মিষ্টি কুমড়ার আবাদ দ্বিগুণ হয়েছে। ২০২৩ সালে আবাদ হয়েছিল ২৮৬ হেক্টর জমিতে, আর ২০২৪ সালে তা বেড়ে ৬১৮ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে। ক্রেতার অভাবে কৃষকরা সমস্যায় পড়েছেন, তবে আমরা তাদের এসব কুমড়া পাইকারি বাজারে নিয়ে বিক্রি করার পরামর্শ দিচ্ছি।’
আলআমিন ভূঁইয়া/এমজে