Logo

সারাদেশ

রাতে আটক যুবদল নেতার সকালে মৃত্যু, হত্যার অভিযোগ স্বজনদের

Icon

জেলা প্রতিনিধি, কুমিল্লা

প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ২২:০৯

রাতে আটক যুবদল নেতার সকালে মৃত্যু, হত্যার অভিযোগ স্বজনদের

কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবি ইউনিয়নের যুবদলের আহ্বায়ক তৌহিদুল ইসলামকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে হত্যার অভিযোগে উঠেছে। পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যার অভিযোগ করা হলেও এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

নিহত যুবদল নেতা তৌহিদুল হাসান পাঁচথুবি ইউনিয়নের ইটাল্লা গ্রামের মৃত মোখলেছুর রহমানের ছেলে। নিহতের শরীরে নির্যাতনের ক্ষতচিহ্ন থাকার কথা জানিয়েছেন চিকিৎসক ও স্বজনেরা।

স্বজনরা জানান, তার কোমর থেকে পায়ের নিচ পর্যন্ত এমনভাবে পিটিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে যে কালো ফোলা জখমের চিহ্ন রয়েছে। পেট, বুক, পিঠ, পা, গলাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে শুধুই নির্যাতনের চিহ্ন।

নিহতের চাচাতো ভাই রবিউল ইসলাম বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘আজ শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) তৌহিদের বাবার কুলখানী ছিল। চার দিন আগে তিনি মারা যান। তাই বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে বাড়িতে কুলখানীর জন্য গরু জবাই করি। রাত ২টা বা আড়াইটার দিকে যৌথবাহিনী বাড়ি পরিচয়ে তৌহিদকে তুলে নিয়ে যায়।’

তিনি বলেন, ‘আজ (শুক্রবার) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার এসআই মোরশেদ ফোনে জানান, তৌহিদের অবস্থা খুব খারাপ, আমরা যেন দ্রুত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে আসি। হাসপাতালে আসার পর দেখি তৌহিদ আর নেই। ততক্ষণে সে মারা গেছে। চার দিন আগে তার বাবা মারা গেল; আর আজ যৌথবাহিনী তৌহিদকে মেরে ফেলল। তার বিরুদ্ধে থানায় কোনো অভিযোগ নেই।’

নিহত তৌহিদকে জীবিত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন কোতয়ালী মডেল থানার এসআই মোরশেদ। 

কুমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে থানার ডিউটি অফিসার আমাকে জানান, যৌথবাহিনী ফোন করে বলেছে, ঝাকুনিপাড়া গোমতী বিলাসে দ্রুত যাওয়ার জন্য। ওসি স্যারকে বলে আমি গাড়ি নিয়ে যাই। তখন যৌথবাহিনী আমাকে তৌহিদকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। কিন্তু তৌহিদের অবস্থা বেগতিক দেখে আমি তাদেরকে বলি, আমি একা নেব না, আপনারাও আসেন। কিন্তু তারা আসতে রাজি হয়নি। পরে আমি তৌহিদকে যখন গাড়িতে উঠাই তখনো তার প্রাণ ছিল। কিন্তু কুমেক হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’

এদিকে, নিহত যুবদল নেতা তৌহিদের স্বজনদের দাবি, ‘একই এলাকার ফজলু মিয়ার ছেলে তানজিম আহমেদের সাথে তৌহিদের জমি সংক্রান্ত ঝামেলা ছিল। তানজিম যৌথবাহিনীর কাছে তৌহিদের বিষয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আটক করায়। তৌহিদকে আটক করে নিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় রহমত আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম যৌথবাহিনী সাথে ছিলেন। তারাই যৌথবাহিনীকে দিয়ে তৌহিদকে হত্যা করেছে।’

এ ব্যাপারে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম জানান, ‘এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আমার দ্বারা কোনো কিছু বলা সম্ভব না।’

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য কুমিল্লা পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খানকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এদিকে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা বিএনপি, আমড়াতলী ইউনিয়ন ও পাঁচথুবি ইউনিয়ন বিএনপি এক যৌথ বিবৃতিতে যুবদল নেতা তৌহিদ হত্যাকারীদের  অবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

সোহাইবুল ইসলাম সোহাগ/ওএফ

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর