Logo

সারাদেশ

তিন দিবসে শতকোটি টাকার ফুল বিক্রির আশা

Icon

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১:২২

তিন দিবসে শতকোটি টাকার ফুল বিক্রির আশা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

রাত পোহালেই পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবস। বসন্ত উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে ঘিরেও ফুলের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে। এই তিন বিশেষ দিবসকে কেন্দ্র করে দেশের অন্যতম বৃহৎ ফুল উৎপাদনকারী জেলা ঝিনাইদহের চাষিরা এখন ফুল পরিচর্যা, সংগ্রহ ও বাজারজাতকরণের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।  

জেলার ফুলচাষি ও ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, এ বছর অন্তত ১০০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি করতে পারবেন। জেলার ৬ উপজেলার মধ্যে চারটিতে গোলাপ, গাঁদা, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, টিউলিপ, থাই গোলাপ, চন্দ্রমল্লিকা ও রজনীগন্ধাসহ বাহারি ফুলের চাষ হচ্ছে প্রায় তিন দশক ধরে।  

সরেজমিনে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না, কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ও মহেশপুর উপজেলার নেপা বাজারের পাইকারি ফুলের বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার ফুল বিক্রি হচ্ছে। ভোর হতেই ফুলচাষিরা ক্ষেতে নেমে পড়েন। দুপুর পর্যন্ত চলে ফুল সংগ্রহের কাজ। পরে ফুলগুলো পাইকারদের কাছে বিক্রি হয় এবং সেখান থেকে চলে যায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে।  

ঝিনাইদহ থেকে দেশের মোট গাঁদা ফুলের ৭০ শতাংশ সরবরাহ হয়। বাজারে বর্তমানে গাঁদা ফুল মানভেদে প্রতি ঝুপা (গোছা) ২৫০-৩৬০ টাকা, গোলাপ প্রতি পিস ১৮-২৫ টাকা, জারবেরা ৮-১০ টাকা, রজনিগন্ধা ৬-৭ টাকা এবং গ্ল্যাডিওলাস ১০-১২ টাকায় পাইকারি বিক্রি হচ্ছে।  

গান্না গ্রামের ফুলচাষি সোলাইমান হোসেন বলেন, ‘এক একর জমিতে চন্দ্রমল্লিকা, জারবেরা, গোলাপ ও গাঁদা ফুলের চাষ করেছি। বিশেষ দিবসকে ঘিরে ফুলগাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছি। বাজারে ফুলের দাম বেশি হলে ভালো লাভ হবে।’  

ফুলচাষি শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘সারা বছর গাঁদা ও গোলাপের চাহিদা থাকে, তবে ডিসেম্বর থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত বিশেষ দিবসগুলোতে চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এই সময়কে ঘিরেই আমরা বাড়তি যত্ন নিই।’ 

কালীগঞ্জের ফুলচাষি টিপু সুলতান বলেন, ‘ভালোবাসা দিবসে গোলাপ ও রজনিগন্ধা, একুশে ফেব্রুয়ারিতে গাঁদা ফুল বেশি বিক্রি হয়। এ জন্য এখন ফুলের পরিচর্যা করছি, যাতে ভালো দামে বিক্রি করা যায়।’

ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এবার জেলায় ২২৪ হেক্টর জমিতে ফুলের চাষ হয়েছে। সদর উপজেলায় ২৭ হেক্টর, কালীগঞ্জে ৭৫ হেক্টর, কোটচাঁদপুরে ৫২ হেক্টর ও মহেশপুরে ৭০ হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হয়েছে।  

ঝিনাইদহ ফুলচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি জমির উদ্দিন বলেন, ‘এই তিন বিশেষ দিবসকে কেন্দ্র করে আমরা অন্তত ১০০ কোটি টাকার ফুল বিক্রির আশা করছি। ঝিনাইদহের ফুলের খ্যাতি সারাদেশেই রয়েছে।’

ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ষষ্টি চন্দ্র রায় বলেন, ‘সারা দেশের ফুলের চাহিদা মেটাচ্ছেন ঝিনাইদহের চাষিরা। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো উৎপাদন হয়েছে। চাষিরা অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বেশি টাকার ফুল বিক্রি করতে পারবেন।’

এম বুরহান উদ্দিন/এমআই

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর