Logo

সারাদেশ

বিএনপি নেতার অস্ত্রের মহড়া দিয়ে বাজার দখল, অতঃপর বহিষ্কার

Icon

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১:১৭

বিএনপি নেতার অস্ত্রের মহড়া দিয়ে বাজার দখল, অতঃপর বহিষ্কার

গাজীপুরের শ্রীপুরে প্রকাশ্যে রামদা নিয়ে মহড়া দিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে এমসি বাজার দখল করে চাঁদা তুলেছে একটি সংঘবদ্ধ দল। ওই দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্থানীয় এক বিএনপি নেতা। তিনি এখন থেকে বাজার নিয়ন্ত্রণ করবেন বলে সেখানে প্রকাশ্যে বক্তব্যে ঘোষণা দিয়েছেন। এ সময় সেখানে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়। এতে বাজারে ব্যবসায়ীসহ জনমনে আতঙ্ক দেখা দেয়।

এই ঘটনার একটি ভিডিও শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার এমসি বাজারে শনিবার বিকেল ৪টায় এ ঘটনা ঘটে। প্রকাশ্যে চাঁদা তোলার নেতৃত্ব দেওয়া ও নিয়মিত চাঁদা তোলার ঘোষণা দেওয়া ওই ব্যক্তির নাম মো. জাহাঙ্গীর আলম (৪০)। তিনি তেলিহাটি ইউনিয়নের মোলাইদ গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। জাহাঙ্গীর শ্রীপুর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক সদস্য। এই ঘটনা ভাইরাল হওয়ার ২ ঘণ্টার মধ্যে সন্ধ্যা ৬টায় তাকে পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।

ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওতে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমি বাজারে এসেছি আপনাদেরকে সহযোগিতা করতে। আজকের পর থেকে এই বাজারের সব কন্ট্রোল করব আমি। কে ডাকছে, কে না ডাকছে, সেটা আমার জানার বিষয় নয়। আমার নেতৃত্বে এই বাজার চলবে। আজকের পর থেকে আমি জাহাঙ্গীর যতদিন বেঁচে থাকব, ততদিন পর্যন্ত এই বাজার আমার নেতৃত্বে চলবে। আপনাদেরকে আমি বলছি দোকানদার ভাইয়েরা। আজকে থেকে আপনারা খাজনা দেওয়া শুরু করে দেন। এখন এই মুহূর্তে আমার লোকজন খাজনা উঠাবে। কেউ বাধার সৃষ্টি করলে তাকে কঠিনভাবে প্রতিহত করব। তাকে অনেক খেসারত দিতে হবে। তাই সকলকে অনুরোধ করে বলছি, আপনারা কেউ এই কাজে এসে বাধা দিবেন না। আমাদের কাজ আমাদের করতে দেন। আপনারা কেউ ভয় পাবেন না। সকলকে ধন্যবাদ।’

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাথায় লাল গামছা পেঁচিয়ে বিকেল পৌনে ৪টার দিকে জাহাঙ্গীর ও তার লোকজন বাজারে আসেন। তারা এমসি বাজার ইউর্টান থেকে মহাসড়কে মিছিল নিয়ে বাজারের উত্তর পাশে স্বপ্নপুরী হোটেলের সামনে এসে থামে। সেখানে একটি প্লাস্টিকের চেয়ারে দাঁড়িয়ে তিনি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন। চাঁদা তোলার সময় জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে অন্তত ৪০ জন ছিলেন। তাদের বেশিরভাগের হাতে ছিল রাম দা, লোহার রড, ছুরি ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র। তারা আচমকা বাজারে এসে বাজার নিয়ন্ত্রণের ঘোষণা দিয়ে চাঁদা তোলা শুরু করে। ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ৩০০ থেকে ১০০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়।

এ প্রসঙ্গে মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এগুলো কিছু না। দাও-টাও কিছু না। আমি টেহা পয়সা উঠাইছি না। এগুলো আরিফের লোক আইসা আমারে হেয় করার জন্য করছে। সে আমার বড়ি ভাঙচুর করছিল, অফিস ভাঙচুর করছিল। পরে আজকে আমি তারে খুঁজতে গেছিলাম। তারে পাইছি না পরে চলে আসছি।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মন্ডল বলেন, ‘এ বিষয়ে অবগত হয়েছি। খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর