Logo

সারাদেশ

সরকারি গ্রন্থাগারে রাজনৈতিক প্রোগ্রাম, পাঠকদের ক্ষোভ

Icon

বরগুনা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৫:২৯

সরকারি গ্রন্থাগারে রাজনৈতিক প্রোগ্রাম, পাঠকদের ক্ষোভ

ছবি : বাংলাদেশের খবর

বরগুনা জেলা গণগ্রন্থাগারের মিলনায়তনে রাজনৈতিক প্রোগ্রাম আয়োজনকে ঘিরে সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। বই পড়ার স্থানে এমন আয়োজনে পাঠকদের মধ্যেও বিরাজ করছে ক্ষোভ। কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে নিন্দা জানিয়েছেন। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতিতেই এ আয়োজন করা হয়েছে।

জানা যায়, বরগুনা জেলা গণগ্রন্থাগারে মোট নিবন্ধিত পাঠক রয়েছেন ১৪৪ জন। প্রতি গড়ে ৮০-১০০ জন পাঠক এখানে উপস্থিত হয়ে বই পড়েন। সরকারি ও সাপ্তাহিক ছুটির দিন ব্যতীত শনিবার থেকে বুধবার প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে গ্রন্থাগার।

তবে সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভা করেন বরগুনা জেলা বিএনপি। জেলা গণগ্রন্থাগার মিলনায়তনে আয়োজিত এ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু। এ কারণে সকাল থেকেই নেতাকর্মীরা গ্রন্থাগার প্রাঙ্গণে জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। এতে নিয়মিত পাঠকদের বই পড়া ব্যাহত হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে গ্রন্থাগারের একাধিক পাঠক বলেন, স্লোগানের ফলে আমরা কেউ রুমে বসতে পারছিলাম না। বুঝেনই তো, একদম নীরব জায়গায় মানুষ হাঁটাচলা করলেও শব্দ হয়। সেখানে শত মানুষ জড়ো হওয়া, স্লোগান দেওয়া—এ আয়োজনটি অন্য কোথাও করা যেতে পারত।

তারা আরও বলেন, দেখুন এখানে আমরা রাজনৈতিক দলের দোষ দিচ্ছি না। কারণ রাজনৈতিক নেতারা ডিসি সাহেবের কাছে অনুমতি চেয়েছেন, তিনি অনুমতি দিয়েছেন—আমরা এমনটাই শুনেছি। শিল্পকলা একাডেমিতে এ আয়োজন করলে সুন্দর হতো।

আরেক পাঠক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে লেখেন, ‘পাবলিক লাইব্রেরিতে রাজনৈতিক স্লোগান—এটা বোধহয় বিশ্বের প্রথম হলো আমাদের বরগুনায়!! দেখুন, আপনারা/আমরা যে দলের রাজনীতিই করি না কেন, পাবলিক লাইব্রেরিতে কি পড়ার পরিবেশ নষ্ট করা ঠিক??? 

সকাল থেকে কোনোভাবেই বই পড়া সম্ভব হলো না!! ডিসি সাহেবও কীভাবে পারলেন এখানে এই সমাবেশ করতে দিতে!! বরগুনায় তো অন্যান্য জায়গাও ছিল!! টাউন হল অডিটোরিয়াম কেন রাখা হলো তাহলে!!!’ 

এ পোস্টে অনেকেই মন্তব্য করে নিন্দা জানান।

লেখক খান নাঈম বলেন, ‘আমার প্রথম উপন্যাসের বই প্রকাশ পেয়েছে এবারের বইমেলায়। বইটির মোড়ক উন্মোচনের জন্য জেলা পাবলিক লাইব্রেরির অডিটোরিয়ামের অনুমতি চেয়েছিলাম। এখানকার কর্তৃপক্ষ আমাকে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। আমি জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সঙ্গে কথা বললে তিনি আমাকে পাবলিক লাইব্রেরির অডিটোরিয়াম ব্যবহারের অনুমতি দেননি। তিনি বলেছেন, পাবলিক লাইব্রেরির কার্যক্রম ছাড়া অন্য কোনো কার্যক্রমের জন্য অডিটোরিয়াম ব্যবহারের অনুমতি নেই। অথচ আজ দেখলাম এখানে একটা রাজনৈতিক দলের সভা হচ্ছে। এতে বই পড়ার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরগুনা জেলা গণগ্রন্থাগারের লাইব্রেরিয়ান দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘এটা ডিসি স্যার অনুমতি দিয়েছেন। আমরা এ বিষয়ে কিছু করিনি।’

বরগুনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, ‘এ বিষয়টি আমার জানা নেই। এটা পাবলিক লাইব্রেরির বিষয়, আমি কেন অনুমতি দেব? বিষয়টি শুনে পাবলিক লাইব্রেরির কর্মকর্তাদের অফিসে ডেকেছি। তাদের আমি জিজ্ঞাসা করব।’

খান নাঈম/এমবি 

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর