সমন্বয়ক পরিচয়ে ব্যবসায়ীর ঘরে ঢুকে তল্লাশি, গ্রামবাসীর হাতে আটক ৫

ফেনী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩০

ফেনী সদর উপজেলার লেমুয়ায় ইউনিয়নের মধ্যম চাঁদপুর গ্রামে সমন্বয়ক পরিচয়ে ঘরে ঢুকে তল্লাশি করার অভিযোগে পাঁচজনকে আটক করেছে গ্রামবাসী। পরে মুচলেকা নিয়ে তাদের থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে।
সমন্বয় পরিচয়কারী আটকরা হলেন, ফেনী পৌরসভার বারাহীপুর ভূঁইয়া বাড়ির এনামুল হক বাবু, শান্তিধারা এলাকার আবদুল্লাহ আল ওহি, ডাক্তারপাড়া এলাকার জিহাদ হাসান প্রান্ত, সদর উপজেলার ফাজিলপুর এলাকার শাহরিয়ার ইসলাম আলভি ও চাড়িপুর এলাকার শাহাদাত হোসেন। তারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে জানা গেছে।
গ্রামবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মধ্যম চাঁদপুর গ্রামের বাসিন্দা মমিনুল হক ভূঞা ঢাকায় গার্মেন্ট ব্যবসা করেন এবং তিনি লেমুয়া উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটিতে বেশ কয়েকবার সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। বিগত সময়ে তিনি আওয়ামী লীগের সমর্থক ছিলেন। তবে কোনো পদ-পদবি বা মামলার আসামির তালিকায় তার নাম নেই।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে বাড়িতে আসেন তিনি। পরে অনুষ্ঠান শেষে আবার তিনি ঢাকায় ফিরে যান। সোমবার রাতে সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে পাঁচজন মমিনুল হক ভূঞার ঘরে ঢুকে তল্লাশি শুরু করেন। এ সময় ঘরে থাকা নারী ও শিশুরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে এসে তাদের আটক করে পুলিশে খবর দেন।
সমাজ উন্নয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি আলী মনছুর ভূঞা সুমন বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘মমিন ভূঞা আমাদের সমাজের সভাপতি। তার বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেপ্তারের কথা বলে সমন্বয়ক পরিচয়ে এখানে এসে কয়েকজন চাঁদাবাজির চেষ্টা করেছে। শুরুতে পরিবারের সদস্যরা দরজা খুলতে না চাইলেও তারা সেনাবাহিনীর লোকজন নিয়ে এসেছেন বলে দরজা খুলতে বাধ্য করেন।’
লেমুয়া ইউনিয়ন জামায়াতের আমির কামরুল ইসলাম বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘মমিনুল হক ভূঞা আওয়ামী লীগের সমর্থক হলেও কখনো পদ-পদবিতে ছিলেন না। তিনি অত্যন্ত ভালো মানুষ। কিন্তু রাতে হঠাৎ তারা এসে সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে ঘরে ঢুকে তল্লাশি করেন। যদি কোনো অপরাধীকেও এভাবে আটক করতে হয়, তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রয়েছে। প্রয়োজনে সেখানে তারা (সমন্বয়ক) আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করতে পারেন। মূলত এখানে তারা চাঁদাবাজির উদ্দেশে এসেছেন। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের আটক করে রাতেই বোগদাদিয়া তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছি।’
এ ব্যাপারে ফেনী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শামসুজ্জামান বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের থানায় নিয়ে আসে। এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত অবগত হয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকায় মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’
- এমরান পাটোয়ারী/এমজে